চিম্বুক পাহাড়

চিম্বুক পাহাড়
শেয়ার করুন সবার সাথে

চিম্বুক পাহাড় ভ্রমণ

চিম্বুক পাহাড় শুধু বাংলাদেশের নয়, বরং সারা বিশ্বের গর্ব। প্রতিবছর দেশ দেশান্তর থেকে প্রচুর মানুষ ভীড় জমায় বাংলাদেশের প্রাচীনতম ও তৃতীয় উচ্চতম পাহাড়ের অপার সৌন্দর্য উপভোগ করতে। বান্দরবান শহর থেকে মাত্র ২৬ কিলোমিটার দূরে ২৫০০ ফুট দীর্ঘ উঁচুতে এই পাহাড় অবস্থিত৷ বাংলাদেশের দার্জিলিং নামে খ্যাত এই পাহাড়ের চুড়ায় দাড়িয়ে চোখ বুলিয়ে নেওয়া সম্ভব পুরো বান্দরবানের উপর। আকাশের কাছে মেঘের ভেলায় ভেসে বেড়ানোর মতো সময় উপভোগ করতে চাইলে, আপনিও ছুটে যেতে পারেন চিম্বুক পাহাড়ের কোলে।

তাহলে জেনে নেওয়া যাক, কীভাবে যেতে পারবেন বান্দরবানের মূল আকর্ষণ চিম্বুকের চুড়ায়, কোথায় থাকবেন, খাবেন ও সবকিছু।

যাবেন কীভাবে

বান্দরবানের আশেপাশের সকল স্থানগুলোতে যেতে হলে আপনাকে যাত্রা শুরু করতে হবে বান্দরবান শহর থেকে।

ঢাকা থেকে বান্দরবান আসতে ঢাকার বিভিন্ন স্থান থেকে আপনি পেয়ে যাবেন ইউনিক, সৌদিয়া, এস আলমস, দেশ, শ্যামলী, হানিফ, সেইন্ট মার্টিন পরিবহন সহ এসি/ নন এসি নানা নামের বাস। রাত ৯ঃ৩০ থেকে ১১ টার বাসে ছয় থেকে আট ঘন্টায় পৌছে যাবেন বান্দরবান শহরে। বাসের ধরন অনুযায়ী ৬০০ থেকে ১২০০ টাকার মধ্যে পেয়ে যাবেন টিকিট।



ট্রেনে আসতে হলে নিতে হবে ২৫০ থেকে ৭০০ টাকার মধ্যে চট্টগ্রামের ট্রেনের টিকিট। সেক্ষেত্রে কমলাপুর স্টেশন থেকে পেয়ে যাবেন সোনার বাংলা, তূর্না, গোধূলি, প্রভাতি সহ ঢাকা টু বান্দরবানগামী বিভিন্ন ট্রেন।

চট্টগ্রাম পৌছে আপনাকে যেতে হবে বাস বদ্দারহাট/ পূর্বানী বাস টার্মিনালে। সেক্ষেত্রে চট্টগ্রাম থেকে বান্দরবান শহরের টিকিট খরচ জনপ্রতি ২০০ থেকে ৩০০ টাকা।

বান্দরবান থেকে চিম্বুক পাহাড় আসতে হলে বান্দরবান শহরের স্টেশন থেকে পেয়ে যাবেন নানা ধরনের গাড়ি। যেমনঃ চান্দের গাড়ি, জীপ, পাজেরো। এর মধ্যে যে কোনো গাড়িতে আপনি পৌছাতে পারবেন চিম্বুক পাহাড়ের পথে। 

থাকবেন কোথায়

পাহাড়ের রানী চিম্বুকের আশেপাশে রাত্রি যাপন করতে চাইলে জেলা প্রশাসক নিয়ন্ত্রিত একটি রেস্ট হাউজ আছে। তবে সেখানে থাকার জন্য অনুমতি প্রয়োজন। এছাড়াও বান্দরবান শহরে ৬০০ থেকে ৩০০০ টাকা বাজেটে বিভিন্ন ধরনের হোটেল, মোটেল ও কটেজ পেয়ে যাবেন আপনি। সেখানে রাত কাটিয়ে ঘুরে আসতে পারবেন চিম্বুক পাহাড়ের আশেপাশে।

খাবেন কোথায়

চিম্বুক পাহাড় বান্দরবান শহর থেকে খানিকটা দূরে অবস্থিত হওয়ায়, এর আশেপাশের এলাকা দুর্গম। তাই রেস্তোরা ও বড় ধরনের হোটেল খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। তবে এখানে আপনি বান্দরবান সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রিত একটি ক্যান্টিন পাবেন। সকালের



নাস্তা অথবা দুপুরের খাবারের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ হিসেবে চিম্বুক পাহাড়ের আশেপাশে এই স্থানটি হতে পারে উপযুক্ত।

তবে, বান্দরবান শহর থেকে আপনি দুপুরের খাবার প্যাকেট করে নিয়ে বের হতে পারেন চিম্বুকের মায়ায় বিলীন হতে। সেক্ষেত্রে বান্দরবান শহরে পেয়ে যাবেন নানা ধরনের ছোট বড় হোটেল ও রেস্তোরা। 

ভ্রমণ টিপস

  • চিম্বুক পাহাড়ে ঘুরে আসতে চাইলে বান্দরবান শহর থেকে শুকনো খাবার ও পর্যাপ্ত পানি নিয়ে নিতে পারেন।
  • প্লাস্টিক, আবর্জনা যেখানে সেখানে ফেলে পাহাড়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যে আঘাত ফেলবেন না।
  • আদিবাসীদের হাতের তৈরী তৈজসপত্র কিনে নিয়ে যেতে পারেন চিম্বুকের স্মৃতি হিসেবে।
  • আদিবাসীদের অসম্মান করা হয়, এমন কোনো আচরণ করবেন না।
  • বান্দরবান পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় বৃষ্টির সময় পিচ্ছিল হয়ে যায়। তাই শীতের সময় চিম্বুক পাহাড় ভ্রমনের জন্য উপযুক্ত।
  • বান্দরবান থেকে চিম্বুকের গাড়ি বিকাল ৪ টার পর বন্ধ থাকে। তাই একদিনে ঘুরে আসতে হলে সকালে যেয়ে সঠিক সময়ে ফিরে আসা শ্রেয়।

সতর্কতা

  • বান্দরবান শহর থেকে  সি এন জি, মাহেন্দ্র অথবা যেকোনো ধরনের গাড়ি ভাড়া করার সময়, স্টেশনে সরাসরি যোগাযোগ করবেন ও সঠিক দরদাম করে নিবেন।
  • পাহাড়ি এলাকা ও শহরের বাহিরে হওয়ায় নেটওয়ার্ক পাওয়া কষ্টসাধ্য। রবি ও টেলিটিক সিম সাথে নিতে পারেন ইমারজেন্সি কন্টাক্ট এর জন্য।
  • প্রাইভেট কার নিয়ে আসলে গুগল ম্যাপের মাধ্যমে অথবা গাইড ভাড়া করে পথ নিশ্চিত হয়ে নিবেন। পথ হারিয়ে ফেললে পাহাড়ি রাস্তায় বড় ধরনের দুর্ঘটনার সম্ভাবনা থাকে।
  • পাহাড়ি রাস্তা হওয়ায় ড্রাইভিং এর সময় অতিরিক্ত সাবধানতা প্রয়োজন। বৃষ্টির সময় চিম্বুকের রাস্তা পরিহার করা শ্রেয়।
  • চিম্বুকের রিসোর্টে আগে থেকে বুকিং দেওয়া না থাকলে ৪ টার মধ্যে বান্দরবানের গাড়িতে উঠে পরা শ্রেয়।
  • চিম্বুক পাহাড় দুর্গম স্থানে অবস্থিত হওয়ায়, খাবারের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা সাথে রাখা শ্রেয়।

 


শেয়ার করুন সবার সাথে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!