বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা থেকে বৃহত্তম নগরী চট্টগ্রাম জেলায় যাওয়ার জনপ্রিয় ও স্বল্পখরচের একটি পরিবহন মাধ্যম হলো ট্রেন বা রেল সেবা। চট্টগ্রাম জেলা ঢাকা থেকে অনেক দূরে অবস্থিত। তাই ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যেতে বেশিরভাগ মানুষ ট্রেনে চলাচলকেই বেছে নেয়। তাছাড়া ট্রেনে ভ্রমণ করা অনেক আনন্দেরও।
আর দেশের মোট রেলযাত্রীর একটা বিরাট অংশ এই ঢাকা টু চট্টগ্রাম রুটে যাতায়াত করে।কিন্তু ট্রেনে যেতে হলে ট্রেন ছাড়ার সময়সূচি, কতক্ষণ সময় লাগে যেতে,ট্রেনের টিকিটের দাম কত,রেলওয়ে স্টেশন কোথায় কোথায় আছে ইত্যাদি তথ্য জানা দরকার।কারণ যারা কখনও ট্রেনে চড়েনি বা একা একা যাননি বা যারা চট্টগ্রামের বাইরের জেলার তাদের জন্য এসব তথ্য কাজে লাগবে। আজকের আর্টিকেলটি থাকছে ঢাকা টু চট্টগ্রাম ট্রেনের সময়সূচি নিয়ে।
ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের দূরত্ব কত ?
ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম জেলার দূরত্ব দুইভাবে নিরূপণ করা হয়েছে। একটি সড়ক পথ অপরটি রেলপথ। সড়ক পথে এই দূরত্ব ২৪৮ কিলোমিটার।আর রেলপথে দূরত্ব ৩৪৬ কিলোমিটার। ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত সড়ক পথের তুলনায় রেলপথটি একটু বেশি ঘুরে যাওয়া হয় বিধায় এই দূরত্বটা বেশি।
ঢাকা টু চট্টগ্রামে যে সকল আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করে
ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম রেলরুটে ৫ টি আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করে। যথা:
- মহানগর প্রভাতী (704)
- মহানগর এক্সপ্রেস (772)
- তূর্ণা এক্সপ্রেস (742)
- সোনার বাংলা এক্সপ্রেস (788)
- সুবর্ণ এক্সপ্রেস (702)
এসব ট্রেন চলাচলের নির্ধারিত সময় রয়েছে।সেসব তথ্য বিস্তারিত দেওয়া হলো।
মহানগর প্রভাতী (704)
ছাড়ার সময়: সকাল ৭:৪৫
কখন পৌঁছায়: দুপুর ২ টায়
বন্ধের দিন: নেই
কোন স্টেশনে থামে: ৮ টি স্টেশনে থামে।যথা: ঢাকা বিমানবন্দর রেলস্টেশন, ভৈরব বাজার জংশন,ব্রাহ্মণবাড়িয়া,আখাউড়া, কুমিল্লা জংশন,লাকসাম জংশন,গুণাবতী এবং ফেনী।
পৌঁছাতে সময় লাগবে: ৬ ঘণ্টা ১৫ মিনিট
মহানগর এক্সপ্রেস (772)
ছাড়ার সময়: রাত ৯:২০
কখন পৌঁছায়: ভোর ৪:৫০
বন্ধের দিন: রবিবার
কোন স্টেশনে থামে: ১২ টি স্টেশনে থামে।যথা:ঢাকা বিমানবন্দর রেলস্টেশন, নরসিংদী,ভৈরব বাজার জংশন, আশুগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া,আখাউড়া,কসবা, কুমিল্লা জংশন,লাকসাম জংশন,নাঙ্গলকোট, ফেনী জংশন এবং কুমিরা।
পৌঁছাতে সময় লাগবে: ৭ ঘণ্টা ৩০ মিনিট
তূর্ণা এক্সপ্রেস (742)
ছাড়ার সময়: রাত ১১:৩০
কখন পৌঁছায়: ভোর ৬:২০
বন্ধের দিন: নেই
কোন স্টেশনে থামে: ৭ টি স্টেশনে থামে। ঢাকা বিমানবন্দর রেলস্টেশন, ভৈরব বাজার জংশন,ব্রাহ্মণবাড়িয়া,আখাউড়া,কুমিল্লা জংশন,লাকসাম জংশন এবং ফেনী জংশন।
পৌঁছাতে সময় লাগবে: ৬ ঘণ্টা ৫০ মিনিট
সোনার বাংলা এক্সপ্রেস (788)
ছাড়ার সময়: সকাল ৭ টা
কখন পৌঁছায়: দুপুর ১২:১৫
বন্ধের দিন: বুধবার
কোন স্টেশনে থামে: বিরতিহীন ট্রেনটি ৪/৫ মিনিটের জন্য ঢাকা বিমানবন্দর রেলস্টেশনে থামে
পৌঁছাতে সময় লাগবে: ৫ ঘণ্টা ১৫ মিনিট
সুবর্ণ এক্সপ্রেস (702)
ছাড়ার সময়: বিকাল ৪:৩০
কখন পৌঁছায়: রাত ৯:৫০
বন্ধের দিন: সোমবার
কোন স্টেশনে থামে: বিরতিহীন ট্রেনটি ৪/৫ মিনিটের জন্য ঢাকা বিমানবন্দর রেলস্টেশনে থামে
পৌঁছাতে সময় লাগবে: ৫ ঘণ্টা ২০ মিনিট
ঢাকা টু চট্টগ্রামে যে সকল মেইল ট্রেন চলাচল করে
ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম রেলরুটে ৩ টি মেইল ট্রেন চলাচল করে।যথা:
- চট্টগ্রাম মেইল (02)
- কর্ণফুলী এক্সপ্রেস (04)
- চট্টলা এক্সপ্রেস (64)
এসব মেইল ট্রেন চলাচলের নির্ধারিত সময় রয়েছে।সেসব তথ্য নিচে বিস্তারিত দেওয়া হলো।
চট্টগ্রাম মেইল (02)
ছাড়ার সময়: রাত ১০:৩০
কখন পৌঁছায়: সকাল ৭:২৫
বন্ধের দিন: নেই
পৌঁছাতে সময় লাগবে: প্রায় ৯ ঘণ্টা
কর্ণফুলী এক্সপ্রেস (04)
ছাড়ার সময়: সকাল ৮:৪৫
কখন পৌঁছায়: সন্ধ্যা ৬:১৫
বন্ধের দিন: নেই
পৌঁছাতে সময় লাগবে: প্রায় সাড়ে ৯ ঘণ্টা
চট্টলা এক্সপ্রেস (64)
ছাড়ার সময়: দুপুর ১ টা
কখন পৌঁছায়: রাত ৮:৩০
বন্ধের দিন: মঙ্গলবার
পৌঁছাতে সময় লাগবে: প্রায় সাড়ে ৭ ঘণ্টা
ঢাকা টু চট্টগ্রাম ট্রেনের সময়সূচী (আন্তঃনগর)
ঢাকা টু চট্টগ্রাম রেলওয়েতে যে ৫ টি আন্তঃনগর ট্রেন চলে তার সময়সূচি তালিকা আকারে নিচে দেওয়া হলো।
ট্রেনের নাম | বন্ধের দিন | ছাড়ার সময় | পৌঁছানোর সময় |
মহানগর প্রভাতী | নেই | সকাল ৭:৪৫ | দুপুর ২ টা |
মহানগর এক্সপ্রেস | রবিবার | রাত ৯:২০ | ভোর ৪:৫০ |
তূর্ণা এক্সপ্রেস | নেই | রাত ১১:৩০ | ভোর ৬:২০ |
সোনার বাংলা এক্সপ্রেস | বুধবার | সকাল ৭:০০ | দুপুর ১২:১৫ |
সুবর্ণ এক্সপ্রেস | সোমবার | বিকাল ৪:৩০ | রাত ৯:৫০ |
ঢাকা টু চট্টগ্রাম ট্রেনের সময়সূচি (মেইল এক্সপ্রেস)
ঢাকা টু চট্টগ্রাম রেলওয়েতে যে ৩টি মেইল ট্রেন চলে তার সময়সূচি তালিকা আকারে নিচে দেওয়া হলো।
ট্রেনের নাম | বন্ধের দিন | ছাড়ার সময় | পৌঁছানোর সময় |
চট্টগ্রাম মেইল | নেই | রাত ১০:৩০ | সকাল ৭:২৫ |
কর্ণফুলী এক্সপ্রেস | নেই | সকাল ৮:৪৫ | সন্ধ্যা ৬:১৫ |
চট্টলা এক্সপ্রেস | মঙ্গলবার | দুপুর ১ টা | রাত ১:৩০ |
ঢাকা টু চট্টগ্রাম ট্রেনের ভাড়া (কেবিনসহ)
ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের ট্রেনের ভাড়া বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃক নির্ধারিত হয়েছে। তাই ভাড়া নিয়ে টিটির সাথে বা টিকিট কাউন্টারে গিয়ে তর্ক করা যাবে না। এছাড়া ট্রেনে সব আসন সমান নয়। কারণ ট্রেনে কেবিন,এসির সুবিধাসহ সীট রয়েছে যার ভাড়া তুলনামূলক বেশি। তাই যারা কোন সীটের ভাড়া কত, কেবিন ভাড়া কত তা জানেন না তাদের সুবিধার জন্য নিচের তালিকায় ভাড়া জানিয়ে দিলাম।
আসন শ্রেনী | ট্রেনের ভাড়া |
২য় সাধারণ | ৯০ টাকা |
২য় মেইল | ১১৫ টাকা |
কমিউটার | ১৪৫ টাকা |
সুলভ | ১৭৫ টাকা |
শোভন | ২৮৫ টাকা |
শোভন চেয়ার | ৩৪৫ টাকা |
১ম চেয়ার | ৪৬০ টাকা |
১ম কেবিন | ৬৮৫ টাকা |
স্নিগ্ধা | ৬৫৬ টাকা |
এসি সীট | ৭৮৮ টাকা |
এসি কেবিন | ১১৭৯ টাকা |