এখন বাংলাদেশে স্বর্ণের যে বাজার, সে তুলনায় ভুটান থেকে ২৪ ক্যারেট স্বর্ণের দাম ১/৩ (তিন ভাগের এক ভাগ) কম মূল্যে শুল্কমুক্ত হারে কেনার সুযোগ দিয়েছে ভুটানিজ সরকার। তাই ভুটান থেকে স্বর্ণ কিনে, দেশীয় বাজারে বিক্রির মাধ্যমে লাভবান হতে পারবেন বাংলাদেশীরা।
তিব্বতের একদম শেষ সীমানায় ভুটানের অবস্থান। প্রচুর বিদেশীদের আনাগোনায় মুখরিত থাকে সারা বছর। তবে করোনায় বেশ বড় ধাক্কা আসে ‘বজ্র ড্রাগনের দেশ’ হিসেবে খ্যাত- ভুটানের। তবে সে ধাক্কা কাটিয়ে উঠলেও, গত বছর Sustainable Development Fee (SDF) বাবদ প্রতি রাতের জন্যে $200 আরোপ করায় পর্যটকদের ভুটান ভ্রমণে শিথিলতা চলে আসে। তাই, সস্তায় Gold কেনার সুযোগ দিয়ে, পর্যটকদের আবারো ভুটান ভ্রমনে উৎসাহিত করতে পারবেন বলে ভাবছেন- ভুটানের দেশের সরকার ও পর্যটন বিভাগ।
প্রাথমিক হিসেব করা দেখা যায়- বাংলাদেশের তুলনায় ভুটান থেকে স্বর্ণ কিনলে, ২৪ ক্যারেটের খরচ কমে যাবে ৩ ভাগের ১ ভাগ।
এবার হিসাবটা আরেকটু পরিষ্কার করে বলা যাক।
বিদেশ থেকে আসা যেকোন দেশের নাগরিকগণ অন্তত ২০ ভরি (২৩৪ গ্রাম) স্বর্ণ নিখরচায় বাংলাদেশে নিয়ে আসতে পারেন। অর্থাৎ কেও যদি ভাবেন- ভুটান থেকে স্বর্ণ কিনে দেশে বিক্রি করবেন, তাহলে লাভ করতে পারবেন প্রায় ৫ লাখ রুপি। সাথে ২৩৪ গ্রামের উপরে আরো ১০০ গ্রাম বিনা শুল্কে দেশে আনতে পারবেন।
অন্যদিকে-
বাংলাদেশের খুচরা বাজারে ১০ গ্রাম ওজনের ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম-ই পড়ে প্রায় ৭৯ হাজার ১০০ বাংলাদেশি টাকা। তাহলে ২৪ ক্যারেটের দাম তো আরো বেশি-ই হবে।
তবে এখানে একটা বিষয় আছে।
স্বর্ণ কেনা যাবে কম দামে- কথা সত্য। কিন্তু, আপনাকে পর্যটক হিসেবে অন্তত ১ টি রাত ভুটানের কোনও হোটেলে (ট্যুরিজম কাউন্সিলের অনুমোদিত) থাকতে হবে এবং সরকারের নির্ধারিত হারে SDF (সাসটেইনেবেল ডেভেলপমেন্ট ফি) দিতে হবে।
সাসটেইনেবেল ডেভেলপমেন্ট ফি বাবদ ভারতীয়দের খরচ হবে ১২০০ রুপি। যা বাংলাদেশিদের জন্যে পড়বে ১৫৫০ টাকার মতন। তবে কেবলমাত্র সার্কভুক্ত দেশ হওয়াতেই আমরা এই সুযোগটি পাচ্ছি। কারণ- অন্যান্য বিদেশী নাগরিকদের জন্যে এই খরচ $২০০ মার্কিন ডলার।
ভুটান সরকার আশা করছে- বাংলাদেশের নাগরিকগণ স্বর্ণ ক্রয়ে যে টাকা ছাড় পাবে, এতে SDF (সাসটেইনেবেল ডেভেলপমেন্ট ফি) ফি প্রভাব ফেলতে পারবে না।
মূলত পর্যটনের বিকাশ চিন্তা করে ভুটানীজ সরকার স্বর্ণ ক্রয়ের এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। পর্যটকেরা ভুটানের ‘ফুন্টশোলিং’ বা ‘থিম্পু’ থেকে ট্যাক্স-ফ্রি রেটে এই স্বর্ণ কিনতে পারবেন সহজেই।
‘স্বর্ণ ক্রয়’ এর এ আকর্ষণীয় সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ভুটান সরকার ভাবছেন- দেশের ট্যুরিজম সেক্টরে আরো বেশি সম্প্রসারণ করতে। দেশের বিদেশী পর্যটকের আসা আরো বেশি বাড়াতে। যদিও কোভিড পরবর্তী SDF এর $200 মাশুলের জন্যে পর্যটকদের আনাগোনা কমে গিয়েছিলো, তবে কম সস্তায় স্বর্ণ কেনার এ সুযোগ নিতে পর্যতকদের সংখ্যা বাড়বে- এটা সহজেই অনুমান করা যাচ্ছে।