ভ্রমণের মাধ্যমে আয় করার সেরা ৭টি উপায়

ভ্রমণের মাধ্যমে আয় করার সেরা ৭টি উপায়
শেয়ার করুন সবার সাথে

ভ্রমণের পাশাপাশি টাকা আয় করতে চান?

ভ্রমণ করতে বা দেশ বিদেশে ঘুরে বেড়াতে কার না ভালো লাগে? বিশেষ করে, এই যান্ত্রিক জীবন থেকে কিছুদিনের জন্য ছুটি নিয়ে নতুন জায়গায় বেড়িয়ে আসতে প্রত্যেকেরই মন কেমন যেন করে। কিন্তু অনেক কারণে তা হয়ে উঠে না। তবে এর মধ্যে টাকাপয়সার বিষয়টি অর্থাৎ বাজেট সংক্রান্ত বিষয়টিও বেশ গুরুত্বপূর্ণ। দেখা যায় এই টাকার জন্য ঘোরাঘুরির ইচ্ছেকে দমিয়ে রাখতে হয় । হয়ে ওঠে না আর ঘোরাঘুরি। অবশ্য এই সমস্যার সমাধান করা যায় যদি ভ্রমণের মাধ্যমে কিছু টাকা আয় করা যায় । আজকে আমরা জানবো কিভাবে ভ্রমণ করেও টাকা আয় করা যায়।

 ওয়েবসাইট তৈরি করার মাধ্যমে

আপনি একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারেন। যেখানে থাকবে ভ্রমণ সংক্রান্ত নানা খবর, ছবি ইত্যাদি। আপনার প্রিয় ঘুরে বেড়ানোর জায়গাগুলোর খবরাখবর নিয়মিত আপলোড করবেন সেই ওয়েবসাইটে। ওয়েবসাইটে থাকবে দেশ-বিদেশের দর্শনীয় স্থানগুলোর খবর। ধীরে ধীরে আপনার ওয়েবসাইটে গুগল এডসেন্সের মাধ্যমে বিজ্ঞাপন পেতে পারেন। ওয়েবসাইটটি জনপ্রিয় হলে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন পেতে পারেন আপনি। তবে এখানে একটি বিষয় মাথায় রাখা জরুরি যে এ জন্য আপনাকে যথেষ্ট পরিমাণে ধৈর্য্যশীল হতে হবে। লেগে থাকতে হবে দিনের পর দিন।

লেখালেখি করার মাধ্যমে  

আচ্ছা আপনার নিজস্ব ওয়েবসাইট নেই, কিন্তু আপনি লেখালেখি পছন্দ করেন। সহজ কথায় আপনি আপনার মনের কথা লিখে ফেলতে পারেন। আপনার ঘুরে বেড়ানোর গল্প- অভিজ্ঞতা ইত্যাদি বিষয়ের ওপর‌ ভ্রমণ সংক্রান্ত ফিচার, আর্টিকেল লিখতে পারেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। বাংলাদেশে এখন অনেক ভ্রমণ সংক্রান্ত ব্লগ ও ওয়েবসাইট আছে, সেখানে লিখতে পারেন আপনার অভিজ্ঞতার বর্ণনা। মানুষজন এখন কোথাও ভ্রমণের আগে, সেই ব্যাপারে আগে থেকেই যথাসম্ভব খুঁটিনাটি জেনে যেতে পছন্দ করেন। অর্থাৎ আপনার লেখালেখির মাধ্যমেই আরেকজন ওই বিষয়ের ওপর অবগত হতে পারেন। ইংরেজিতে দক্ষ হলে এসব ভ্রমণ কাহিনি, লিখতে পারেন বিদেশি ওয়েবসাইটেও। এসব লেখালেখির সম্মানী বেশ ভালো । এখানে ছোট একটা টিপস ভ্রমণ যেমন করবেন, আপনার ইংরেজি ভাষাগত দক্ষতা বাড়ানোর ওপরও জোর দিতে হবে। কারণ ইংরেজিতে লিখলে, আপনার পাঠকরা হবেন, বিশ্বের নানাপ্রান্তের মানুষ। কিন্তু লেখায় ব্যাকরণগত ভুলভ্রান্তি পেলে, পরবর্তীতে, আপনার লেখা তারা আর নাও পড়তে পারেন।

ছবি বিক্রি করার মাধ্যমে

আপনি যেখানেই যাবেন সেখানেই দেখতে পাবেন নতুন দৃশ্য, নতুন কিছু। সঙ্গে সঙ্গে সেই মুহূর্তের ছবি ধারণ করতে পারেন আপনার মোবাইল ফোনে। তারপর এর থেকে বেছে বেছে সবচেয়ে সুন্দর ছবিটি আপনি বিক্রি করতে পারেন বিভিন্ন ফটো এজেন্সির কাছে। এ ধরনের বেশ কিছু ফটো ওয়েবসাইট আছে যারা প্রাকৃতিক দৃশ্যাবলী পশুপাখি প্রাণীর ছবি কিনে থাকে। এজন্য আপনি ছবি তোলার বেসিক কিছু প্রশিক্ষণ বা ওয়ার্কশপে অংশ নিতে পারেন। মনে রাখবেন, আপনি যত বেশি ছবির বেসিক জানবেন, ততো ভিন্ন হবে আপনার ছবি। ততোবেশি মানুষকে আপনি আকৃষ্ট করতে পারবেন। আপনার ছবি বিক্রি হবে ভালো দামে।

ট্রাভেল ব্লগ করার মাধ্যমে

ভিডিও ব্লগিং এখন বেশ জনপ্রিয় একটি মাধ্যম টাকা আয় করার জন্য। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশে ভিডিও ব্লগিং উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়েছে। দেশ ও বিদেশের নানা ট্যুরিস্ট প্লেসের ওপর অসংখ্য ভিডিও দেখা যায় ইউটিউবে। আপনার ওয়েবসাইটে কিংবা ইউটিউবে আপনি চাইলে এ ধরনের প্রচুর ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করতে পারেন। এভাবে ইউটিউব থেকে আপনি আয় করতে পারেন চমকপ্রদ একটা টাকার অংক।
আবারো আসি, পুরনো কথায় আপনাকে ভিডিও ব্লগিং ভালোমতে শিখে আসতে হবে। এছাড়াও আপনাকে অনেক অনেক সময় দিতে হবে । মনে রাখবেন আপনি যতো ধৈর্য্য ধারণ করবেন, এরপর ফল ততো ভালো হবে।

স্পন্সরশিপ নেওয়ার মাধ্যমে

আপনি যদি একজন জনপ্রিয় পর্যটক হয়ে উঠতে পারেন তাহলে আপনি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ভ্রমণের সময় স্পরন্সিপ পেতে পারেন। যেমন বাংলাদেশের যারা এভারেস্ট জয় করেছিলেন সেই কঠিন যাত্রার স্পন্সারশিপ করেছিল বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান। এক্ষেত্রে যে টাকার পরিমাণটি পাওয়া যায় তা রীতিমত অবাক করার মত। এখন দেশীয় নানা ধরনের প্রতিষ্ঠানই ট্যুরের ওপর স্পন্সর করে থাকে। সে ক্ষেত্রে আপনাকে ঠিক করতে হবে, আপনি ট্যুরের সঙ্গে বা অভিযানের সঙ্গে কোন কোন প্রতিষ্ঠানের স্বার্থ জড়িয়ে আছে।

ট্রাভেল গাইডকে পেশা হিসেবে নেওয়ার মাধ্যমে

আপনি ঘোরাঘুরি পছন্দ করেন, মানুষের সাথে কথা বলতে, মিশতে পছন্দ করেন, সেক্ষেত্রে আপনি হতে পারেন একজন ট্রাভেল গাইড। এ ক্ষেত্রে আপনাকে কোন একটি নির্দিষ্ট স্থান বা বিষয়ের উপরে হতে হবে রীতিমতো বিশেষজ্ঞ। যাতে করে আপনি ওই বিষয়ের উপরে পর্যটকদের জানাতে পারেন এবং পর্যটকদের গাইড করতে পারেন। আপনাকে এ জন্য হতে হবে স্মার্ট, বিনয়ী ও সৎ। বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রচুর বিদেশি ট্যুরিস্ট আসেন নানা ধরনের কাজে। পেশাগত , ভ্রমণ, গবেষণা বা সরকারি কাজে। সে ক্ষেত্রে আপনিও তাদের গাইড হিসেবে কাজ করতে পারেন।

দোভাষী হিসেবে কাজ করার মাধ্যমে 

আপনি যদি বেশ কয়েকটি ভাষা জানেন, তাহলে আপনি আপনার পিয়ার গ্রুপের মধ্যে সবচেয়ে আলাদা। দেশে অর্থনৈতিক কারণে এখন প্রচুর বিদেশি আসছে, আপনি দোভাষী হিসেবে তাদের সঙ্গে বিভিন্ন স্থানে যেতে পারেন। এতে আপনার ঘোরাও হবে, টাকাও উপার্জন করতে পারেন।

এছাড়াও আপনি ক্যারিয়ার হিসেবে এমন কিছু পেশা বেশি নিতে পারেন যেখানে আপনাকে প্রতিনিয়ত ঘুরে বেড়াতে হবে। এই যেমন ধরুন ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট, নাবিক কিংবা দীর্ঘ পথের বাসের চালক। এসব পেশার বিশেষত্ব হল আপনাকে প্রতিনিয়ত ঘুরে বেড়াতে হবে। আপনি ঘুরে বেড়াতে পারেন দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন প্রান্তে । প্রতিনিয়ত নতুন নতুন মানুষ ও নতুন নতুন স্থানের সঙ্গে পরিচিত হতে পারবেন আপনি। ধীরে ধীরে আপনার অভিজ্ঞতার ঝুড়িটাও হবে বেশ ভারী।

ছবিঃ https://unsplash.com/


শেয়ার করুন সবার সাথে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!