ভ্রমণ টিপস

Tour tips & tricks
শেয়ার করুন সবার সাথে

ভ্রমণে দরকারি কিছু টিপস

জীবনকে উপভোগ করার অন্যতম সেরা একটি উপায় “ভ্রমণ”। আমরা আমাদের জীবনের বেশিরভাগ সময়ই নানা ধরনের কাজে লিপ্ত থাকার কারণে যেকোনো ভ্রমণের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রতিটি দিন আমাদের কাছে খুব বেশি আনন্দের। তবে আনন্দের এই মুহুর্তগুলো নিমিষেই খারাপ করে দিতে পারে যেকোনো একটি দুর্ঘটনা। বা আপনার একটি অসাবধানতার কারণে ঘটে যেতে পারে একটি অপ্রীতিকর ঘটনা। তাই আমাদের জানা উচিত ভ্রমণের সময় আপনার কি কি করা উচিত এবং কি কি করা উচিত না। যাতে আপনারা সম্পূর্ণ আনন্দটুক উপভোগ করতে পারেন কোন রকম সমস্যা ছাড়াই। এ রকমই কিছু দরকারি টিপস নিয়ে সাজানো হয়েছে আজকের পোস্টটি।

● সব সময় আপনার বাজেট অনুযায়ী বেস্ট হোটেলে রুম বুক করার চেষ্টা করুন। লাক্সারি হোটেলে থেকে অতিরিক্ত টাকা খরচ করে ফেললে ঘোরাঘুরির সাথে আপোষ করতে হতে পারে।
● কখনোই ২ জনের রুমে ৫/৬ জন থাকার প্ল্যান করবেন না। অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে ভ্রমণসঙ্গীর সংখ্যা বেড়ে গেলে সেটা হোটেল কর্তৃপক্ষকে অবহিত করুন।
● হোটেলের টাওয়েল ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন। কেননা এতে অনেক ধরনের রোগ জীবাণু থাকার সম্ভবনা থাকে। নিজের টাওয়েল ব্যবহার করুন।
● ঘোরাঘুরি শেষে যতটা সম্ভব পরিষ্কার পরিছন্ন হয়ে হোটেলে প্রবেশ করুন বা রুমে ঢুকে প্রথমেই পরিষ্কার হয়ে নিন।
● হোটেলে অতিরিক্ত হট্টগোল করা থেকে বিরত থাকুন। মনে রাখবেন আপনারা একটি হোটেলে একজন অথিতির মতই সম্মানিত তাই নিজেদের সম্মান নিজেদেরই রক্ষা করতে হবে।
● অকারনে রুম সার্ভিসে ফোন করবেন না বা হোটেলবয়দের বিব্রত করবেন না।
● সাতার না জানলে সুইমিং পুলের গভীর অংশে যাওয়া থেকে বিরত থাকুন
● বাচ্চাদের চোখে চোখে রাখুন
● কোন ভাবেই হোটেলের এখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা ফেলবেন না।
● যে কোনো সার্ভিস নেয়ার পরে অবশ্যই ধন্যবাদ দিন



● ঘুরতে যাওয়ার পুর্বে ভালো করে খেয়াল করুন দরজার লক ঠিকভাবে করেছেন কিনা
● অপরিচিত কাউকে নিজের সাথে হোটেলে নিয়ে আসবেন না। এতে অনেক ধরনের বিপদ ঘটার সম্ভাবনা থাকে।
● আপনার হোটেলের রুম নাম্বার এবং ঠিকানা ফোনে সেভ করে রাখুন

ভ্রমণের সময় যেসব জিনিস অবশ্যই সাথে নিবেনঃ

● ফোন চার্জার ও পাওয়ার ব্যাংক। ফোনের চার্জার সব সকেটে সেট হয়না। তাই একটি ইউনিভার্সাল প্ল্যাগ এডাপ্টার সাথে রাখুন।
● ব্যাসিক কিছু ঔষধ যেমন নাপা, ফ্ল্যাজিল, ফেক্সো, ওমিডন ইত্যাদি
● একটি ভালো মানের ক্যামেরা। যদি আপনার ফোনে উন্নত ক্যামেরা থাকে তাহলে ফোনে যথাযথ স্টোরেজ রাখুন ছবি তোলার জন্য। ড্রোন শট নিতে চাইলে ট্রাভেল ড্রোন কিনে নিতে পারেন।
● পাহাড়ি এলাকায় ঘুরতে গেলে একটি সুইস আর্মি নাইফ কিনে নিন, অনেক কাজে লাগবে।
● পানি বিশুদ্ধিকরন ট্যাবলেট বা বোতল সাথে নিন। কারণ খাওয়ার পানির ব্যবস্থা সব জায়গায় নাও থাকতে পারে।
● ভালো পরিমান ডাটা কিনে নিন কারণ যাত্রা পথে বিভিন্ন কাজে আপনার ইন্টারনেটের সহায়তা নিতে হবে।
● ফোনে অবশ্যই প্রিয় গানগুলি স্টোর করে নিন আর সাথে নিন একটি উন্নতমানের হেডফোন
● অনেক জায়গায় আপনাকে জাতীয় পরিচয়পত্র দেখিয়ে ভ্রমণের অনুমতি নিতে হয় তাই প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সাথে রাখুন
● মশার উপদ্রব থেকে বাঁচতে মস্কিটো অয়েন্টমেন্ট সাথে রাখুন
● একটি দূরবীন সাথে রাখতে পারেন যার মাধ্যমে আপনি সীমান্তবর্তী এলাকায় ঘুরতে গেলে অন্য দেশ পরিস্কারভাবে দেখতে পারবেন
● আপনার মোবাইল ওয়ালেটে ব্যাকাপ হিসেবে টাকা রাখুন

ভ্রমণের সাধারন কিছু টিপস অ্যান্ড ট্রিকসঃ

● সবকিছুর ব্যাপারে পজিটিভ থাকুন; পজিটিভ ভাবুন
● সাথে কি কি নেয়া প্রয়োজন তার একটি তালিকা তৈরি করুন
● ভ্রমণের স্থানের স্থানীয় ভাষা ও সংস্কৃতি সম্পর্কে ধারণা নিয়ে যান
● ক্যামেরার জন্য এক্সট্রা ব্যাটারী নিতে ভুলবেন না
● শীতকালে ভ্রমণ করলে যথেষ্ট পরিমান গরম কাপড় নিন
● প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের ফটোকপি সাথে রাখুন
● কি কি জামাকাপড় পরবেন আগে থেকেই ঠিক করে নিন
● টুথব্রাস, মুজা এবং অতিরিক্ত অন্তর্বাস সাথে রাখুন
● যে কোনো বাহনে ভ্রমণের ক্ষেত্রে দামাদামি করে নিবেন
● ভ্রমণে বেশি বেশি পানি পান করুন যাতে ডিহাইড্রেট হয়ে না যান



● কোন পথ বা ডিরেকশন সম্পর্কে জানতে যাকে তাকে জিজ্ঞেস না করে দোকানদারকে জিজ্ঞেস করুন
● আপনার ভ্রমণ প্ল্যান সম্পর্কে অবশ্যই আপনার বাসার কাউকে অবহিত করে যান
● সম্ভব হলে একটি ফাস্ট এইড কিট সাথে রাখুন

সলো ট্রিপ বা একা ভ্রমণের কিছু প্রয়োজনীয় টিপসঃ

আত্মবিশ্বাসঃ সলো ট্রিপের মূল চালিকাশক্তি আপনার আত্মবিশ্বাস; তাই যেকোনো পরিস্থিতিতে নিজের আত্মবিশ্বাস অটুট রাখুন। ভাবুন আপনি একাই একশ।
সঠিক প্ল্যানঃ কোথায় যাবেন, কিভাবে যাবেন, কোথায় থাকবেন, কি কি দেখবেন এই সবকিছুর একটা ক্লিয়ার পিকচার মাথায় সেট করে রাখুন। খরচের ব্যাপারটাও বিশেষভাবে বিবেচনা করতে হবে। জায়গা নির্বাচন করার সময় টুরিস্ট স্পট বেঁছে নেয়ার চেষ্টা করুন।
রিসার্চঃ যেখানে যাবেন ঘুরতে সেই জায়গার ব্যাপারে আগে থেকেই একটু পড়াশুনা করে গেলে মন্দ হয়না
● প্রয়োজনীয় জিনিস সাথে নেয়াঃ ভ্রমণের জন্য প্রয়োজনীয় প্রতিটি বস্তু সাথে নিতে ভুলবেন না। যেমন পাওয়ার ব্যাংক, ক্যামেরা, প্রয়োজনীয় ঔষধ, পানি, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ইত্যাদি।
যানবাহনঃ অবশ্যই পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ব্যবহার করুন। দূরের পথে প্রাইভেট বাহন বিপদের কারণ হতে পারে।
ব্যবহারঃ ভ্রমণকালীন সময়ে সবার সাথে ভালো ব্যবহার করুন। কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে ঠাণ্ডা মাথায় হ্যান্ডেল করুন।



● পরিবারকে জানিয়ে যানঃ আপনার ভ্রমণের বিস্তারিত আপনার পরিবারের কাউকে অবশ্যই জানিয়ে যাবেন।
অন্যান্য সতর্কতাঃ অপরিচিত কারো দেয়া কোন খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। আইন নিজের হাতে তুলে নিবেন না, নিকটস্থ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর যোগাযোগ নাম্বার সাথে রাখুন। কমফোর্টাবল জামাকাপড় নির্বাচন করুন। সবার সাথে খাপ খাইয়ে চলার চেষ্টা করবেন।

লঞ্চ ভ্রমণের কিছু টিপসঃ

● কোন লম্বা বন্ধের মধ্যে লঞ্চ ভ্রমণের প্ল্যান থাকলে অন্তত ১ সপ্তাহ আগে লঞ্চের কেবিন বুকিং করুন
● সরাসরি লঞ্চ থেকে কেবিন বুক করুন। কোন তৃতীয় ব্যক্তির দ্বারা কেবিন করাতে গেলে প্রতারিত হতে পারেন। অনলাইনেও বুকিং এর সুবিধা দিচ্ছে কিছু ওয়েবসাইট।
● দিনের বেলা লঞ্চ ভ্রমণ করলে চাঁদপুর থেকে ঘুরে আসুন; একদিনেই হয়ে যাবে
● মনে রাখবেন কখনোই অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে লঞ্চে উঠবেন না
● রাতের বেলা লঞ্চ ভ্রমণের সৌন্দর্য উপভোগ করতে চাইলে অবশ্যই লঞ্চের সামনের লনে চলে যান; সুযোগ থাকলে ছাদে গিয়ে শুয়ে থাকতে পারেন। তবে সেক্ষেত্রে অবশ্যই সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে
● কেবিন থেকে বের হওয়ার সময় অবশ্যই কেবিনের দরজা ভালো করে লক করে বের হবেন।
● লাফ দিয়ে লঞ্চে উঠা বা লঞ্চ থেকে নামা থেকে বিরত থাকুন। কেননা এতে দুর্ঘটনা ঘটার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে।
● লঞ্চে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে লঞ্চে কর্মরত আনসার বাহিনীকে জানান



● দুর্যোগপূর্ন আবহাওয়াতে ছোটাছুটি না করে স্থির থাকুন ও সৃষ্টিকর্তার কাছে সাহায্য প্রার্থনা করুন
● লঞ্চের সাইডের কার্নিশে হাটা খুবই বিপদজনক

কিভাবে কম খরচে বিমান টিকেট কিনবেন?

● প্ল্যান হওয়ার সাথে সাথেই টিকেট কিনে ফেলুনঃ সস্তায় বিমানের টিকেট কেনার মূলমন্ত্র ভ্রমণের তারিখের অনেক আগেই টিকেট বুক করে ফেলা। কারণ আপনি যত নিকটবর্তী তারিখে কিনবেন আপনাকে তত বেশি দামে টিকেট কিনতে হবে।
● অনলাইন অ্যাপ বা অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে টিকেট কিনুনঃ আজকাল অনেক এয়ারলাইন্স তাদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটের মাধ্যমে টিকেট সেল করে থাকে। এখানে তারা রিজনাবল দামে টিকেট সেল করে। এছাড়া অনলাইন বিভিন্ন অ্যাপে না না ধরনের অফার থাকে।
● প্রক্সি ব্যবহার করে বা প্রাইভেট ব্রাউজার দিয়ে টিকেট বুক করুনঃ আপনি কি ধরনের ভ্রমণকারী সেটা আপনার ব্রাউজারের কুকি ডাটা থেকে কালেক্ট করে রাখে বিভিন্ন কোম্পানী। তাই আপনাকে রেগুলার সেগমেন্টে ফেলে আপনাকে অফার প্রাইজের পরিবর্তে রেগুলার প্রাইজ প্রদর্শন করে।
● টিকেটের মূল্যের সাথে কি কি চার্জ অন্তর্ভুক্ত সেটা ভালো করে দেখে নিন। কেননা অনেক সময় শুধুমাত্র টিকেটের মূল্যই দেয়া থাকে কিন্তু পরে আপনাকে বিভিন্ন চার্জ বাবদ বেশকিছু টাকা গুনতে হয়। সেক্ষেত্রে আপনাকে পরবর্তিতে বেশ ভালো অংকের টাকা পরিশোধ করতে হবে। তাই আগে থেকেই এই বিষয়গুলো নিশ্চিত হয়ে নিন।
● ছুটির দিনে টিকেট বুক না করে সপ্তাহের মাঝামাঝি কোন একদিন বুক করুন। কারণ সপ্তাহের মাঝামাঝি অর্থাৎ সোম, মঙ্গলবার টিকেটের দাম তুলনামূলক কম থাকে।
● টিকেট কেনার সময় একবারে রাউন্ড টিকেট কেনার চেষ্টা করুন। এতে খরচ কম পরে।
● টুরিস্ট সিজনে ফ্ল্যাইটের টিকেট প্রাইজ তুলনামূলক বেশি থাকে। তাই এরকম সিজনে টিকেট বুক করবেন না।


শেয়ার করুন সবার সাথে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!