সম্প্রতি বাংলাদেশ রেলওয়ে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের আওতায় ঢাকা থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলা পর্যন্ত নতুন রেললাইন নির্মাণ করেছে। এই রেললাইনের দৈর্ঘ্য ৮২ কিলোমিটার। তবে ঢাকা থেকে ভাঙ্গার দূরত্ব ৭৭ কিলোমিটার।
গত ১০ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী এই রেললাইন উদ্বোধন করেন। যারা ঢাকা থেকে ভাঙ্গা সহজে যাতায়াত করতে চান তাদের জন্য ট্রেনের সময়সূচি ও ভাড়ার বিষয়ে জেনে রাখা জরুরি। তাই আজকের আর্টিকেলে ঢাকা টু ভাঙ্গা ট্রেনের সময়সূচি ও ভাড়ার তালিকা ২০২৩ নিয়ে জানানো হবে।
ঢাকা টু ভাঙ্গা ট্রেনের সময়সূচি ২০২৩ইং
ঢাকা টু ভাঙ্গা রুটে চলাচলের জন্য চীন থেকে কেনা নতুন সাতটি কোচের সমন্বয়ে একটি বিশেষ ট্রেন প্রস্তুত করা হয়েছে।তবে প্রথম দিকে নতুন ট্রেন আসছে না।তাই আপাতত পুরনো ট্রেন ব্যবহার করা হবে।এই রুটে চলাচলকারী ট্রেনগুলো হলো :
- মধুমতি এক্সপ্রেস
- বেনাপোল এক্সপ্রেস
- সুন্দরবন এক্সপ্রেস
ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে ট্রেনগুলো ভাঙ্গার উদ্দেশ্যে রওনা দিবে।তবে ট্রেনগুলো আপাতত গেন্ডারিয়া, মাওয়া, পদ্মা, শিবচর এবং ভাঙ্গা স্টেশনে যাত্রাবিরতি দিবে।পরবর্তীতে আরও স্টেশন নির্মিত হলে যাত্রাবিরতির সময় আরও বাড়বে।
সুন্দরবন এক্সপ্রেস
ঢাকা টু ভাঙ্গা রুটে যেসব ট্রেন চলবে তার মধ্যে অন্যতম সুন্দরবন এক্সপ্রেস। বুধবার এই ট্রেনটির সাপ্তাহিক ছুটির দিন।বাকি ৬ দিনই ট্রেনটি চলবে এই রুটে। কমলাপুর স্টেশন থেকে রওনা হয়ে ভাঙ্গা পৌঁছাবে।নতুন এই রুটে ট্রেনটি কমলাপুর-গেন্ডারিয়া, গেন্ডারিয়া-মাওয়া এবং মাওয়া-ভাঙ্গা তিনটি স্টেশনে থামবে। আর ঢাকা থেকে ভাঙ্গা যেতে সময় লাগবে দেড় ঘণ্টার মতো।
মধুমতি এক্সপ্রেস
ঢাকা টু ভাঙ্গা রুটের আরেকটি ট্রেন হলো মধুমতি এক্সপ্রেস ।রাজশাহী থেকে গোয়ালন্দ ঘাট পর্যন্ত চলাচলকারী মধুমতি এক্সপ্রেসের রুটের দৈর্ঘ্য বাড়িয়ে পদ্মাসেতু হয়ে ঢাকা পর্যন্ত চালানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। তাই সুন্দরবন এক্সপ্রেস ও বেনাপোল এক্সপ্রেসের পাশাপাশি এই ট্রেনটিও চলবে।
বৃহস্পতিবার এই ট্রেনটির সাপ্তাহিক ছুটির দিন।বাকি ৬ দিনই ট্রেনটি চলবে। কমলাপুর স্টেশন থেকে রওনা হবে।ভাঙ্গা পৌঁছাতে সময় লাগবে দেড় ঘণ্টার মতো।
বেনাপোল এক্সপ্রেস
ঢাকা টু ভাঙ্গা রুটে বেনাপোল এক্সপ্রেস নামের ট্রেনটিও চলাচল করবে। বুধবার এটির সাপ্তাহিক বন্ধ ।বাকি ৬ দিনই ট্রেনটি চলবে এই রুটে। কমলাপুর স্টেশন থেকে ভাঙ্গা পৌঁছাবে। এতে সময় লাগবে সোয়া ১ ঘণ্টার মতো।
ঢাকা থেকে ভাঙ্গা ট্রেন সময়সূচি
ট্রেনের নাম | সাপ্তাহিক বন্ধের দিন | ঢাকা হতে ছাড়ার সময় | ভাঙ্গা পৌঁছানোর সময় |
সুন্দরবন এক্সপ্রেস | বুধবার | সকাল ৮:১৫ মিনিট | সকাল ৯:২৯ মিনিট |
মধুমতি এক্সপ্রেস | বৃহস্পতিবার | দুপুর ৩:০০ মিনিট | বিকাল ৪:৩৪ মিনিট |
বেনাপোল এক্সপ্রেস | বুধবার | রাত ১১:৪৫ মিনিট | রাত ০১:০৫ মিনিট |
ভাঙ্গা থেকে ঢাকা ট্রেন সময়সূচি
ট্রেনের নাম | সাপ্তাহিক বন্ধের দিন | ভাঙ্গা হতে ছাড়ার সময় | ঢাকা পৌঁছানোর সময় |
সুন্দরবন এক্সপ্রেস | বুধবার | রাত ৩:৪৮ মিনিট | ভোর ৫ টা |
মধুমতি এক্সপ্রেস | বৃহস্পতিবার | দুপুর ১২:২৩ টা | দুপুর ২:০০ টা |
বেনাপোল এক্সপ্রেস | বুধবার | সন্ধ্যা ৭:২৮ মিনিট | রাত ৮:৪৫ মিনিট |
ঢাকা টু ভাঙ্গা ট্রেনের ভাড়া ২০২৩ইং
বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ঢাকা টু ভাঙ্গা পর্যন্ত ট্রেনের ভাড়া নির্ধারণ করেছে। ঢাকা থেকে ভাঙ্গার দূরত্ব ৭৭ কিলোমিটার হলেও ৩৫৯ কিলোমিটার থেকে ৩৬৪ কিলোমিটার ধরে ভাড়া নির্ধারণ করেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
এর মানে হলো পদ্মা সেতুর জন্য পন্টেজ চার্জ ধরা হয়েছে।সাথে ১৫ শতাংশ ভ্যাট যোগ করা হবে।এই কারণে বাসের তুলনায় ট্রেনে খরচ বেশি হবে।
চার শ্রেণীর আসনে নিম্নোক্ত ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে।যথা:
আসনের ধরণ | টিকিটের মূল্য |
শোভন চেয়ার | ৩৫৫ |
স্নিগ্ধা | ৬৭৮ |
এসি সিট | ৮১৭ |
এসি বার্থ | ১২১৯ |
কীভাবে অনলাইনে ট্রেনের টিকিট বুকিং করবেন ?
ঢাকা টু ভাঙ্গা ট্রেনের টিকিট অনলাইনেও পাওয়া যাবে। এজন্য বাংলাদেশ রেলওয়ের একটি ওয়েবসাইট রয়েছে যেখান থেকে ই-টিকিট বুকিং দেওয়া যাবে।
https://eticket.railway.gov.bd এই সাইটে গেলে অনলাইনে ঢাকা টু ভাঙ্গা ট্রেনের টিকিট বুকিং করা যাবে।
এছাড়াও মোবাইলে Rail Sheba এ্যাপস ইন্সটল করে ট্রেনের টিকিট বুকিং দিতে পারেন। এই এ্যাপসে প্রথমে নিবন্ধন করে টিকিট কিনতে হবে।
ছবিটি তুলেছেনঃ হাসান মিয়া