সাজেক ভ্যালিঃ কোথায়, যাওয়ার উপায়, হোটেল বুকিং ও দর্শনীয় স্থান

সাজেক ভ্যালী
শেয়ার করুন সবার সাথে

ভ্রমণপ্রেমীদের কাছে এই নামটি যথেষ্ট পরিচিত ও ভালো লাগার। যারা অনেকদিন থেকেই ভাবছেন সাজেক ভ্যালি (Sajek Valley)  থেকে ঘুরে আসবেন, তাদের জন্য সম্পূর্ন গাইডলাইন থাকছে আমাদের এই প্রবন্ধে। আর যারা এখনো সাজেক সম্পর্কে খুব একটা জানেন না, তারা জানতে চলেছেন আমাদের দেশের এমন এক চিত্তাকর্ষক স্থানের কথা যা হয়ত আপনি এর আগে পাশ্চাত্য কোন দেশের ভিডিও বা ইমেজে দেখে থাকবেন। তাহলে চলুন শুরু করা যাকঃ

সাজেক ভ্যালি কোথায় অবস্থিত 

সাজেক বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ ইউনিয়ন হিসেবে পরিচিত যা কিনা রাঙামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলায় অবস্থিত। সাজেকের মোট আয়তন ৭০২ বর্গমাইল এবং সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এর উচ্চতা প্রায় ১৮০০ ফুট। সাজেকের উত্তরে ভারতের ত্রিপুরা, দক্ষিনে রাঙামাটির লংগদু, পূর্বে ভারতের মিজোরাম এবং পশ্চিমে খাগড়াছড়ির দীঘিনালা। রাঙামাটির তুলনায় দীঘিনালা থেকে সাজেক যাতায়াত অনেক সহজ। খাগড়াছড়ি জেলা থেকে সাজেকের দূরত্ব ৭০ কিলোমিটার আর দীঘিনালা থেকে ৪০ কিলোমিটার। সাজেক যেতে হলে আপনাকে খাগড়াছড়ি থেকে দীঘিনালা আর্মি ক্যাম্প হয়ে যেতে হবে এবং এই আর্মি ক্যাম্প থেকে অবশ্যই আপনাকে সাজেকে প্রবেশের অনুমতি নিয়ে যেতে হবে।

সাজেক ভ্যালির দর্শনীয় স্থান

সাজেক যেতে পারেন যেকোনো সিজনে। কারন প্রতি ঋতুতেই তার নতুন নতু রুপ দেখা যায়। তবে বর্ষাকালে সাজেকের রুপ ভোলার মত না। মূলত সাজেক ভ্যালি ভ্রমণের একটি বড় সুবিধা হচ্ছে, আপনি যাওয়ার পথেই অনেক মনোরম দৃশ্য উপভোগ করতে করতে যেতে পারবেন। এখানকার মূল আদি জনগোষ্ঠীর নাম লুসাই যারা প্রকৃতির একবিন্দু ক্ষতিসাধন না করেই বসবাস করেছে শতবছর ধরে। এছাড়া পাংকুয়া এবং ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর লোকও রয়েছে এখানে যাদের মূল জীবিকা এখানকার বনাঞ্চলের উপর নির্ভরশীল। এসব কারণে সাজেকের নৈসর্গিক সৌন্দর্য এখনো রয়েছে অক্ষত, তরুন।

বাঘাইহাট থেকে সাজেকের পথটি যথেষ্ট রোমাঞ্চকর। আঁকা-বাঁকা পাহাড়ি পথে ছুটে চলা চান্দের (জিপ) গাড়ীর দৃশ্য এবং স্নিগ্ধ বাতাসে প্রকৃতির ঘ্রান আপনাকে নিয়ে যাবে অন্য এক দুনিয়ায়। আদিবাসী শিশুদের মত করেই চারপাশের গাছপালা আপনাকে স্বাগত জানাবে ডাল -পাতা নেড়ে নেড়ে।

সাজেক শুরু হয় রুইলুইপাড়া থেকে আর শেষ মাথায় কংলাক পাহাড়ের চূড়ায় রয়েছে কংলাকপাড়া। তবে রুইলুইপাড়া তেই রয়েছে থাকা খাওয়ার রিসোর্ট আর হোটেল। সাজেকে পৌঁছানোর পর আপনি তার অপার সৌন্দর্যে মুগ্ধ হতে বাধ্য। চারপাশে সবুজে মোড়ানো সুবিশাল পাহাড়সারি আর তার উপরে সাদা তুলোর মত মেঘমালা দেখে নয়ন জুড়িয়ে যাবে আপনার। যেন আপনি উঠে এসেছেন আকাশের কোন এক স্তরে যেখানে নেই কোন দূষণ নেই কোন কোলাহল। আপনার দৃষ্টি বার বার হারিয়ে যাবে দূর নীলিমার পানে, অনুভূতিগুলো সব হাতছানি দিয়ে ভেসে বেড়াবে মনের অজান্তে। চারিদিকের সব কিছু ক্রিষ্টাল ঝকঝকে।

কংলাকপাড়া থেকে বেশ ভালো ভাবেই ভারতের লুসাই পাহাড় দেখা যায়। এখান থেকেই কাপ্তাই নদীর উৎপন্ন হয়েছে। বলা হয় কংলাকের চূড়ায় না উঠলে সাজেক ভ্যালি ভ্রমণ বৃথা। এখানে প্রকৃতি তার বিশালতা আর সৌন্দর্যের এক চাদরে মুড়িয়ে রেখেছে চারিপাশে। পাহাড়চূড়া থেকে সবুজ পাহাড় ও মেঘের সমুদ্র দেখে মনে হবে আপনি দার্জিলিং চলে এসেছেন। ফেরার সময় হাজাছড়া ঝর্ণা , দীঘিনালা ঝুলন্ত ব্রিজ ও দীঘিনালা বনবিহার দেখে আসতে পারেন ।

এখানে শুনশান নীরবতার মাঝে ঝিঝি আর নাম না জানা অনেক পাখির ডাকে টুপ করে নেমে আসে সন্ধ্যা। রাত নামলেই সাজেক সাঁজে এক ভিন্ন রূপে। আঁধারেও সে যেন এক মায়াবী এক অপসরা। রুইলুইপাড়া তখন ব্যাস্ত হয়ে যায় পর্যটকদের নানা ধরনের মনোরঞ্জনায়জনে। কেউ বারবি কিউ, তো কেউ বাম্বু চিকেন, কেউ গীটারে সূর তোলে তো কেউ হাতে তালি আর গান দিয়েই মাতিয়ে তোলে আসর। এছাড়া কেউ কেউ দেখবেন রাতের সাজেকের সৌন্দর্য উপভোগ করছে মন ভরে।



পর্যটকরা সাজেক বলতে রুইলুই ও কংলাক পাড়াকেই বুঝে থাকে। কিন্তু এছাড়াও আরও অনেক সুন্দর সুন্দর জায়গা আছে এই সাজেকের আশেপাশে। সাজেক উপত্যকার এসব অদেখা গ্রাম ছবির মতো সুন্দর। তবে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ও বিপর্যস্ত যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে এসব স্থান মানুষের দৃষ্টি সীমার বাইরে রয়েছে এখনো। কে জানে হয়ত অদূর ভবিষ্যতে সেখানে ঘুরে বেড়াবে ভ্রমণপিপাশুরা।

ফেরার পথে হেলিপ্যাড দেখে নিতে পারেন আর সাথে ফ্রী তে পাচ্ছেন সেই মন ভুলানো সবুজঘেরা পথ। তবে এবার মনটা একটু মলিন হয়ে যেতে পারে, যেহেতু এরকম একটি জায়গা থেকে চলে যাচ্ছেন। খাগড়াছড়িতে পৌঁছে হাতে সময় থাকলে রিছাং ঝর্ণা দেখতে ভুলবেন না। এখানে আপনি পাবেন উঁচু-নিচু সবুজ পাহাড় আর নামহীন বুনোফুলের নয়নাভিরাম অফুরন্ত সৌন্দর্য। সেখান থেকে আরবারি পাহাড় বা আলুটিলা খুব বেশি দূরে না। তাই সেখানটাও ঘুরে যাওয়ার পরামর্শ থাকল।

সাজেক ভ্যালি ভ্রমণের উপযুক্ত সময়

সারা বছরজুড়ে নিজেকে বিভিন্ন রূপে প্রকাশ করে সাজেক। প্রতিটি রূপের আছে ভিন্ন ভিন্ন আবেদন। তাই নির্দিষ্ট করে সাজেক ভ্রমণের সেরা সময় নির্ধারণ করা কঠিন।



তবে আগস্ট থেকে নভেম্বর অর্থাৎ বর্ষার শেষ হতে শীতের শুরুর সময়টা সাজেক ভ্রমণের জন্য উত্তম। এ সময় পাহাড়ের চূড়া থেকে দৃষ্টিগোচর মেঘমালার সৌন্দর্য এখানে আসা পর্যটকদের মুগ্ধতার আবেশে জড়িয়ে নেয়।

সাজেক ভ্যালি যাওয়ার উপায়

সাজেক ভ্যালির অবস্থান রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার অন্তর্গত দেশের সর্ববৃহৎ ইউনিয়ন সাজেকে। তবে খাগড়াছড়ির দীঘিনালা হয়ে সাজেক ভ্রমণ সবচেয়ে সহজ। ঢাকা থেকে সরাসরি দীঘিনালা এবং খাগড়াছড়ি উভয় রুটে বাস চলাচল করে। নিম্নে ঢাকা থেকে সাজেক ভ্রমণের পন্থা তুলে ধরা হলো –

ঢাকা থেকে খাগড়াছড়ি

সড়কপথে ঢাকা থেকে খাগড়াছড়ি যেতে সময় লাগে প্রায় ৮ ঘণ্টা। ঢাকার পান্থপথ, কলাবাগান, গাবতলী ও আব্দুল্লাহপুর থেকে খাগড়াছড়ির উদ্দেশ্যে বাস ছেড়ে যায়। গ্রীন লাইন, হানিফ পরিবহন, শ্যামলী পরিবহন, সেন্টমার্টিন পরিবহন, দেশ ট্রাভেলস, ইকোনো সার্ভিস ইত্যাদি অপারেটরের বাস এই রুটে চলাচল করে। নন এসি বাসের ভাড়া ৭৫০ টাকা এবং এসি বাসের ভাড়া ১২০০ থেকে ১৬০০ টাকা।

ঢাকা থেকে দীঘিনালা

প্রতিদিন ঢাকার আব্দুল্লাহপুর সহ বিভিন্ন স্থান থেকে শান্তি পরিবহনের বাস দীঘিনালার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। নন এসি বাস ভাড়া ৮২০ টাকা।

খাগড়াছড়ি/দীঘিনালা থেকে সাজেক

খাগড়াছড়ি থেকে সাজেকের দূরত্ব ৭০ কিলোমিটারের কাছাকাছি, যেতে সময় লাগে প্রায় ৩ ঘণ্টা। খাগড়াছড়ি শহরের শাপলা চত্বর থেকে সাজেক যাওয়ার জন্য চান্দের গাড়ি, সিএনজি এবং মোটরসাইকেল পাওয়া যায়।



এখান থেকে প্যাকেজ অনুসারে চান্দের গাড়ি রিজার্ভে গুণতে হবে ৭,৫০০ থেকে ১৩,০০০ টাকা। মাহিন্দ্রা ভাড়া পড়বে ৩,৭০০ থেকে ৯,৭০০ টাকা। সিএনজি রিজার্ভ করতে প্রয়োজন হবে ২,৭০০ থেকে ৭,২০০ টাকা। এছাড়া মোটরসাইকেল ভাড়া ১,৩০০ থেকে ২,৫০০ টাকার মধ্যে।

অপরদিকে দীঘিনালা থেকে সাজেকের দূরত্ব প্রায় ৫০ কিলোমিটার। বাস থেকে দীঘিনালা বাস টার্মিনালে নামলেই চোখে পড়বে চান্দের গাড়ি। মূলত চান্দের গাড়িতে করেই অধিকাংশ মানুষ সাজেকের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। এসব গাড়িতে সর্বোচ্চ ১২ জন যাওয়া সম্ভব। প্যাকেজে চান্দের গাড়ি রিজার্ভ করতে ভাড়া পড়বে ৬,২০০ থেকে ১১,৯০০ টাকা। লোকসংখ্যা কম হলে সিএনজি কিংবা মোটরসাইকেল করেও সাজেক যাওয়া সম্ভব। আসা-যাওয়া এবং ১ রাত সাজেকে অবস্থানের জন্য সিএনজি রিজার্ভে ভাড়া পড়বে ৩,৭০০ টাকা। অন্যদিকে মোটরসাইকেল রিজার্ভ করতে প্রয়োজন হবে ১,০০০ থেকে ২,০০০ টাকা।

এছাড়া খাগড়াছড়ি থেকে দীঘিনালা হয়েও সাজেক যাওয়া যায়। দীঘিনালা যেতে বাস ভাড়া পড়বে ৫০ টাকা এবং মোটরসাইকেল ভাড়া পড়বে জনপ্রতি ১০০ টাকা। দীঘিনালা থেকে সাজেকের দূরত্ব কম হওয়ায় এক্ষেত্রে কিছুটা অর্থ সাশ্রয় হবে। পাহাড়ি রাস্তায় সিএনজি করে সাজেক ভ্রমণ বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। তাই সম্ভব হলে অন্য বাহনগুলো ব্যবহারের পরামর্শ রইলো। লোকসংখ্যা কম হলে খাগড়াছড়ি কিংবা দীঘিনালা থেকে অন্য গ্রুপের সাথে শেয়ারে ভ্রমণ করা সম্ভব। সাজেক ভ্রমণে আরেকটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো সেনাবাহিনীর এসকর্ট। দীঘিনালা থেকে দিনে দুইটি এসকর্ট পাওয়া যায়। একটি সকাল ১০টায় এবং অপরটি বিকাল ৩টায়। এসকর্ট ছাড়া সাজেক যাওয়ার অনুমতি নেই। তাই অবশ্যই এসকর্টের শিডিউলটি মাথায় রেখে রওয়ানা দিতে হবে।

রাঙ্গামাটি থেকে সাজেক

রাঙ্গামাটি থেকে সড়ক এবং নৌপথে সাজেক যাওয়া সম্ভব। তার জন্য প্রথমে যেতে হবে বাঘাইছড়িতে। রাঙ্গামাটি বাস টার্মিনাল হতে প্রতিদিন সকাল ৯টার মধ্যে বাঘাইছড়ির বাস ছেড়ে যায়। ভাড়া ২০০ টাকা এবং সময় লাগে প্রায় ৬ ঘণ্টা। রাঙ্গামাটির রিজার্ভ বাজার লঞ্চঘাট থেকে সকাল ৭টা থেকে ১০টার মধ্যে বাঘাইছড়ির উদ্দেশ্যে দোতলা লঞ্চ ছেড়ে যায়। জনপ্রতি ভাড়া ২৫০ টাকা। বাঘাইছড়ি পৌঁছাতে সময় লাগে ৬ ঘণ্টার কাছাকাছি। নৌপথে এই ভ্রমণে চোখে পড়বে কাপ্তাই লেকের অপরূপ সৌন্দর্য। বাঘাইছড়ি থেকে জিপ বা মোটরসাইকেলে করে সাজেক যেতে হবে। ভাড়া জনপ্রতি ৪০০ টাকা।

চট্টগ্রাম থেকে সাজেক

চট্টগ্রাম থেকে সাজেক যেতে হলে প্রথমে আসতে হবে খাগড়াছড়ি বা দীঘিনালায়। চট্টগ্রাম থেকে খাগড়াছড়ি পর্যন্ত পৌঁছাতে সময় লাগবে প্রায় ৪ ঘণ্টা। চট্টগ্রামের অক্সিজেন মোড় থেকে সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যা ৭ঃ৪৫ পর্যন্ত খাগড়াছড়ি এবং দীঘিনালার উদ্দেশ্যে শান্তি পরিবহনের বাস ছেড়ে যায়। নন এসি বাস ভাড়া খাগড়াছড়ি ২০০ টাকা এবং দীঘিনালা ২৫০ টাকা। এছাড়া চট্টগ্রামের কদমতলী বাস টার্মিনাল থেকে খাগড়াছড়ির বিআরটিসি এসি বাস ছাড়ে, ভাড়া ২০০ টাকা। খাগড়াছড়ি, দীঘিনালা থেকে উপরে বর্ণিত উপায়ে সাজেক যেতে হবে।


সাজেক ভ্যালি ভ্রমণ খরচ

নিম্নে ১০ জনের গ্রুপের ঢাকা থেকে খাগড়াছড়ি হয়ে সাজেক ভ্রমণ খরচের একটি ধারণা দেওয়া হলো –
নন এসি বাসে ঢাকা থেকে খাগড়াছড়ি – ১০ × ৭৫০ = ৭,৫০০ টাকা
চান্দের গাড়িতে খাগড়াছড়ি থেকে সাজেক (আসা-যাওয়া এবং ১ রাত্রি অবস্থান) = ৯,৩০০ টাকা
সাজেকে পর্যটকদের প্রবেশ ফি – ১০ × ২০ = ২০০ টাকা
সাজেকে গাড়ির প্রবেশ ফি = ১০০ টাকা
রিসোর্ট/কটেজ ডাবল রুম (আনুমানিক) – ৩,০০০ × ৫ = ১৫,০০০ টাকা
খাবার খরচ = ৫,০০০ টাকা
মোট = ৩৭,১০০ টাকা
জনপ্রতি = ৩,৭১০ টাকা

থাকবেন কোথায়

বর্তমানে সাজেকে থাকা খাওয়ার জন্য আপনাকে খুব বেশি একটা কষ্ট করতে হবে না। কেননা বেসরকারি উদ্যোগে এখানে গড়ে উঠেছে বেশ কিছু মানসম্মত রিসোর্ট এবং খাওয়ার হোটেল। এর বাইরে সেনাবাহিনীর তৈরি রিসোর্টেও থাকতে পারবেন। এসব রিসোর্ট আপনি আপনার বাজেটের উপর ভিত্তি করে ভাড়া করতে পারবেন কেননা এখানে প্রতি রাতের জন্য মাত্র ২০০ টাকা থেকে শুরু করে ১৫০০০ টাকা পর্যন্ত ভাড়ায় রুম পাবেন। এসব রিসোর্ট বা কটেজ থেকে আপনি সাজকের অসম্ভব সুন্দর কিছু ভিউ দেখতে পারবেন। তবে ছুটির দিনে কটেজ বা রিসোর্ট পাওয়া কিছুটা দুষ্কর, তাই ১০-১৫ দিন আগে বুকিং করে রাখতে পারলে ভালো। এবার জেনে নেয়া যাক এখানকার নাম করা কিছু রিসোর্ট ও কটেজের নাম এবং  যোগাযোগ নাম্বার।

সাজেক রিসোর্টঃ

(বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দ্বারা পরিচালিত)

যোগাযোগঃ 01859025694, 01847070395, 01769302370

রুন্ময় রিসোর্টঃ

যোগাযোগঃ 0186547688

মেঘপুঞ্জিঃ

যোগাযোগঃ 01815761065

মেঘ মাচাংঃ

যোগাযোগঃ 01822168877

জুমঘরঃ

যোগাযোগঃ 01884208060

লুসাই কটেজঃ

যোগাযোগঃ 01634198005

রুইলুই পাড়া ক্লাব হাউজঃ

যোগাযোগঃ 01838497612, 01872468942

খাবার খরচ

খাবার খরচ আইটেমভেদে ১০০-২৫০ টাকার মধ্যে হয়ে যাবে।

ভাত,ডাল,দেশি মুরগি, সবজি – ১৮০ টাকা

রক ক্যান্টিনে বারবিকিউ খেতে পারেন ১ পিস মুরগি – ২৫০ টাকা, পরোটা – ১০ টাকা

পাহাড়ী হোটেলে, বারবিকিউঃ ১ পিস মুরগি – ২০০ টাকা, পরোটা – ১০ টাকা

ট্যুর প্ল্যান

প্ল্যান -১

ঢাকা থেকে রাতের বাসে খাগড়াছড়ি চলে যান। সেখান থেকে জীপ বা চান্দের গাড়ি ভাড়া করে রিসাং, আলুটিলা গুহা দেখে, দুপুরে খাগড়াছড়ির যেকোনো রেস্টুরেন্টে আপনারদের বাজেট অনুযায়ী খেয়ে ৩ টার এসকোর্টে সাজেক চলে যেতে পারবেন। সাজেকে আপনার প্ল্যান অনুযায়ী থেকে ফিরত আসার দিন সকাল ১০.৩০ টার এসকোর্টে রওনা দিন। ফেরার পথে হাজাছড়া ঝর্ণা ঘুরে খাগড়াছড়ি অথবা দিঘীনালা থেকে ঢাকার বাসে উঠে চলে আসুন।


প্ল্যান-২

ঢাকা থেকে রাতের বাসে দিঘীনালা গিয়ে হাজাছড়া ঝর্ণা দেখে সকাল ১০.৩০টার এসকোর্টে সাজেক চলে যান। সাজেকে যতদিন ইচ্ছা থেকে ফিরত আসার দিন ৩ টার এসকোর্টে খাগড়াছড়ি চলে আসুন। খাগড়াছড়ি সে রাতে থেকে পরের দিন খাগড়াছড়ির সব স্থান দেখে নিন। সেদিন ই রাতের বাসে ঢাকায় ব্যাক করুন।

প্ল্যান-৩

আপনাদের মধ্যে কারো ট্রেকিং এর অভ্যাস বা শখ থাকলে দিঘীনালাতে একদিন বেশি থেকে তৈদুছড়া ঝর্ণা ঘুরে আসতে পারেন। অথবা খাগড়াছড়ির সীমানাপাড়া দিয়েও তৈদুছড়া ঝর্ণায় যাওয়া যায় এবং এই পথে সময়ও কম লাগে। বাকিসব প্ল্যান-১,২ এর মতই।

সতর্কতা

      • সাজেক যাওয়ার পথে শিশুদের দিকে চকলেট ছুড়ে মারবেন না
      • সাজেকে বিদুৎ নেই, সোলার ব্যবস্থা থাকলেও চার্জ হতে বেশি সময় লাগে তাই সম্ভব হলে পাওয়ার ব্যাংক সাথে রাখুন
      • বাঘাইহাট আর্মি ক্যাম্পে ছবি তোলা নিষেধ
      • সাজেকে শুধুমাত্র রবি, এয়ারটেল ও টেলিটক এর নেটওয়ার্ক ভালো পাওয়া যায়
      • আদিবাসীদের ছবি তোলার ক্ষেত্রে তাদের অনুমতি নিয়ে নিন। অনুমতি ছাড়া ছবি তুলবেন না
      • চাঁদের গাড়ির ছাদে যাওয়ার সময় সাবধান থাকবেন। একটু অসাবধানতাও বড় ধরনের বিপদ ডেকে আনতে পারে
      • সাজেকের বিভিন্ন জায়গায় ময়লা ফেলার ঝুড়ি আছে। যেখানে সেখানে ময়লা ফেলবেন না

      ছবিটি তুলেছেনঃ পারভেজ হোসেন

</ul


শেয়ার করুন সবার সাথে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!