জজ বাড়ি

জজ বাড়ি
শেয়ার করুন সবার সাথে

জজ বাড়ি নবাবগঞ্জ

আমরা অনেক ঢাকাই থেকে বোর হয়ে যাই আর এই একঘেয়েমি জীবন থেকে বের হতে আমরা যাই আউটডোর ভিজিটে । একদিনের ট্যুরের জন্য পারফেক্ট জায়গা ইছামতীর শহর নবাবগঞ্জ। এখানে কয়েকটি জমিদার বাড়ি ও ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা রয়েছে , তবে আজ কথা বলবো নবাবগঞ্জের জনপ্রিয়  জজ বাড়িটি নিয়ে। বান্দুরা-দোহার সড়ক ধরে এগিয়ে গেলেই দেখা মিলবে এই প্রাচীন বাড়িটির। সুন্দর ছিমছাম কিন্তু অপূর্ব কারুকাজে সাজানো বাড়িটি। স্থানীয়দের কাছে জজ বাড়ি নামে পরিচিত হলেও বাড়িটির আসল নাম  ব্রজ নিকেতন।

ইতিহাস 

জজ বাড়ি নবাবগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী বাড়িগুলোর একটি কিন্তু এ বাড়ীর বয়স ২০০ বছরের বেশি। এ বাড়ির নকশা ১৮ শতকের সময়ের ব্রিটিশ স্টাইলে করা যা সবার নজর কারে। জমিদার ব্রজেন সাহা  নিজে বসবাস করার জন্য নির্মাণ করেছিলেন ব্রজ নিকেতন। বসবাসের জন্য তৈরি করেন ”ব্রজ নিকেতন”। কিন্তু পরবর্তী সময়ে ৮০র দশকের দিকে তৎকালীন খ্যাতিমান বিচারক বাড়িটি কিনে নেন আর এর পর থেকেই এই বাড়ি পরিচিত হতে থাকে জজ বাড়ি নামে।

জজ বাড়িতে দেখার কি আছে

এই বাড়িটি সৌন্দর্য দেখতে প্রতিদিন অনেক পর্যটক আসেন। তবে আপনি চাইলে এই বাড়িটির ভিতরে গিয়ে এর সৌন্দর্য দেখতে পারবেন না। অনুমতি নিয়ে তারপরে প্রবেশ করতে হবে বাড়িটির অন্দরের সৌন্দর্য দেখার জন্য। তাই যখনই আসবেন চেষ্টা করবেন অনুমতি নিয়ে আসতে যাতে বাড়ির ভিতরেটি দেখে নিতে পারেন। এ বাড়িটির বাইরের দিকের সৌন্দর্য কিন্তু কম না। প্রাচীন বাড়িটির কারুকাজ ও নকশা। ঠিক যেন মনে হবে অতীতের সেই ব্রিটিশ আমলে ফিরে গেছেন।



নানা প্রজাতির গাছগাছালিতে ঘেরা বাগানটি যেন জজ বাড়ির সৌন্দর্য আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। বিভিন্ন প্রজাতির গাছ ফুলের বাগান দিয়ে সাজানো হয়েছে জজ বাড়ির সামনের বাগান। আরো একটি জিনিস চমৎকার হচ্ছে এখানকার মিনি চিড়িয়াখানা। জজ বাড়ির মিনি চিড়িয়াখানায় দেখা মিলবে ১৫ থেকে ১৬  টি হরিণের। মিনি চিড়িয়াখানার পাশেই রয়েছে জজ বাড়ির পুকুর ঘাট। খুব সুন্দর আর ছিমছাম গোছানো এই পুকুরটি।

প্রাচীন ইউরোপীয় কায়দায় বানানো হয়েছে এই বাড়িটি। বাড়িটির  অন্যতম আকর্ষণ হচ্ছে বাড়িটির সামনের পাঁচটি বিশাল আকৃতির পিলার যেগুলোর গায়ে কারুকাজ করা। পিলার গুলোয় বাড়তি সৌন্দর্য যোগ করেতে এর গায়ে কারুকাজের পাশাপাশি দামি কাচের টুকরো ব্যবহার করা হয়েছে। সাথে অপরূপ কারুকার্যে ঘেরা আটটি বড় জানালা এই দোতলা বাড়িটি সৌন্দর্যতা আরো বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছেন। মাঝখানের বিশাল বারান্দা যেন এক রাজকীয় ভাব এনে দিয়েছে। সবকিছু মিলিয়ে বাড়িটিকে রাজপ্রাসাদের থেকে কোন অংশে কম মনে হবে না আপনার যখন আপনি এটা দেখতে যাবেন।

যেভাবে যাবেন

গুলিস্থানে গোলাপ শাহ মাজার থেকে আপনি আপনি নবাবগঞ্জগামি বিভিন্ন বাস পাবেন।



বাসে চড়ে নেমে পড়ুন কলাকোপা বাসস্ট্যান্ডে ৬০- ৭০ টাকা ভাড়া পরবে। এখান থেকে পায়ে হেঁটে অথবা রিকশায় করে চলে যেতে পারেন সরাসরি নারায়ণগঞ্জের বিখ্যাত জজ বাড়ির। ২ ঘন্টার কম সময়েই পৌঁছে যাবেন।

খাওয়া-দাওয়া

বাস থেকে নেমেই কলাকোপা বাসস্ট্যান্ডে  খাওয়া দাওয়া সেরে নিতে পারেন। যদি টাটকা মাছ খেতে চান তবে খুব কাছেই  মৈনট ঘাটে যেতে পারেন। প্রায় সব ধরনের মাছ আর বাংলা  খাবার পাবেন। এর সাথে মৈনট ঘাটে গোসল করতে পারবেন চাইলে।

আশেপাশের অন্যান্য দর্শনীয় স্থানসমূহ

নবাবগঞ্জে ঘুরে দেখার স্থানের অভাব নেই। একদিন সময় নিয়ে সকালে বের হলে সন্ধ্যায় দারুন এক অভিজ্ঞতা নিয়ে ঢাকা ফিরতে পারবেন।

এ বাড়ি থেকে খুব কাছেই রয়েছে জনপ্রিয় উকিলবাড়ি ও নতুন বাড়ি। সময় করে দেখে আসতে পারেন বাড়িগুলো। বাড়ির কাছেই রয়েছে কলাকোপা আনসার ক্যাম্প। নবাবগঞ্জের সৌন্দর্য দেখতে গেলে এই ক্যাম্প দেখে আসতে পারেন ভালই সময় কাটবে। তাছাড়া হাতে সময় থাকলে মিনি কক্সবাজার বলে খ্যাত মৈনট ঘাট থেকে ঘুরে আসতে পারেন।


শেয়ার করুন সবার সাথে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!