টাঙ্গুয়ার হাওর

Tanguar haor tour plan
শেয়ার করুন সবার সাথে

টাঙ্গুয়ার হাওর ভ্রমণ পরিকল্পনা

টেলিভিশনে আমরা এমন অনেক জায়গা দেখে থাকি যা দেখে আমরা ভাবি, কতই না সুন্দর এই দেশ। হয়ত সচরাচর আমাদের মাথায় আসেই না যে বাংলাদেশেও থাকতে পারে এমন একটি জায়গা। কিন্তু বাস্তবতা এটাই যে আমাদের দেশেও রয়েছে নৈসর্গিক সৌন্দর্যে আবেষ্টিত বহু জায়গা। আর ঠিক তেমনই একটি নয়নাভিরাম জলমহালের নাম টাঙ্গুয়ার হাওর (Tanguar Haor)। হাওরটি বৃহত্তর সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর এবং ধর্মপাশা উপজেলা জুড়ে বিস্তৃত। আয়তনে প্রায় ১০০ বর্গকিলোমিটার দীর্ঘ এ হাওর বাংলাদেশর দ্বিতীয় বৃহত্তম মিঠা পানির জলাভূমি। স্থানীয় লোকজনের কাছে হাওরটি নয়কুড়ি কান্দার ছয়কুড়ি বিল নামেও পরিচিত। এটি দেশের মৎস্য উৎপাদনে অন্যতম প্রধান কেন্দ্র হিসেবে কাজ করে। এখানে যেদিকে দুচোখ যায় শুধু পানি আর পানি। প্রকৃতির এই অপরূপ সৌন্দর্য ভাষায় প্রকাশ করা অসম্ভব। সেই সাথে পরিবেশের ভারসাম্য আর বাস্তুতন্ত্র বজায় রাখার জন্য এটি জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক স্তরে মনোযোগ আকর্ষণে সক্ষম হয়েছে।
ভারতের মেঘালয়ের পাহাড়গুলো যেন বেষ্টনী দিয়ে রেখেছে পুরো হাওরটিকে। এসব পাহাড় থেকে প্রায় ৩০টির মত ঝর্ণা বা ছড়া এসে মিলেছে টাঙ্গুয়ার হাওরে। হাওরের চারিধারে নলখাগড়া আর হিজল করচ বন সৌন্দর্যে এনে দিয়েছে নতুন এক মাত্রা, বর্ষাকালে যার আয়তন বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ২০,০০০ একর।



টাঙ্গুয়ার হাওরের ঠিক মাঝেখানে রয়েছে মনোমুগ্ধকর এক বিল যার নাম হাতিরগাতা। শীতকালে এর বেশিরভাগ স্থানের পানি শুকিয়ে যায় এবং কথিত আছে ব্রিটিশ শাসনামলে ইংরেজরা এখানে তখন তাদের হাতি চরাতে আসতেন এবং সেখান থেকেই এর নাম হয় হাতিরগাতা। ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে এই হাওরে পানি কম থাকে এবং ঠিক তখনই প্রায় ২৫০ প্রজাতির অতিথি পাখিদের আগমনে চারপাশের মনোরম পরিবেশ মুখরিত হয়ে ওঠে। এছাড়া আমাদের দেশি শত প্রজাতির পাখির দেখা পাবেন অহরহ যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য পানকৌড়ি, কালেম, ডাহুক, বালিহাঁস, পাতিহাঁস, বক, গাঙচিল, বক, সারস ইত্যাদি। টাঙ্গুয়ার হাওরে রয়েছে পাখিদের দুটি অভয়ারণ্য যার একটি লেউচ্ছামারা এবং অন্যটি বেরবেড়িয়ার বিল। এছাড়াও এই হাওরে রয়েছে ১৪০ প্রজাতির মাছ, ১২ প্রজাতির ব্যাঙ, প্রায় ১৫০ প্রজাতির সরীসৃপ এবং ১০০০ এর ও বেশি প্রজাতির অমেরুদণ্ডী প্রাণী যার সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে এই হাওরের জীব-বৈচিত্র্য।
এই হাওরে রয়েছে একটি ওয়াচ টাওয়ার যা ভ্রমণ পিপাশুদের জন্য খুবই ভালো লাগার একটি স্থান। শুধু তাই নয় এই ওয়াচ টাওয়ারের আশেপাশের পানি এতোটাই স্বচ্ছ যে ওয়াচ টাওয়ার থেকে হাওরের তলা স্পষ্ট দেখা যায়। টাঙ্গুয়ার হাওরে ছোট বড় প্রায় ৪৬ টি দ্বীপ বা ভাসমান গ্রাম রয়েছে যেখানে মূলত বহুযুগ ধরে হাওরবাসি বসবাস করে আসছে। ২০০০ সালে টাঙ্গুয়ার হাওর রামসার সাইট তালিকায় স্থান করে নেয় যা বাংলাদেশের জন্য একটি গৌরব। টাঙ্গুয়ার হাওরে ভ্রমণ পরিকল্পনার আদ্যপ্রান্ত নিয়ে সাজানো হয়েছে আজকের পর্বটি।

টাঙ্গুয়ার হাওরে কখন যাবেন 

অকৃত্তিম সৌন্দর্যের আধার টাঙ্গুয়ার হাওরে ভ্রমণের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত সময় হলো বর্ষাকাল। এসময় বৃষ্টির পানিতে সব গাছপালা সতেজ রূপ ধারণ করে, তৈরি হয় এক অপূর্ব সুন্দর দৃশ্য। তবে অতিথি পাখি দেখার জন্য আপনাকে যেতে হবে শীতকালে। যদিও এসময় হাওরে পানির পরিমাণ অনেক কম থাকে কিন্তু সৌন্দর্যের কোন ঘাটতি থাকে না তখনো।

টাঙ্গুয়ার হাওরে কীভাবে যাবেন

টাঙ্গুয়ার হাওর যেতে প্রথমেই আপনাকে যেতে হবে সুনামগঞ্জ। ঢাকা থেকে সড়কপথে সুনামগঞ্জের দূরত্ব প্রায় ২৬৬ কিলোমিটার। ঢাকার সায়েদাবাদ এবং মহাখালী বাস-টার্মিনাল থেকে হানিফ, এনা, শ্যামলী সহ বেশ কিছু এসি ও ননএসি বাস সরাসরি সুনামগঞ্জের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে।



সুনামগঞ্জ গিয়ে পৌঁছাতে প্রায় ৬ ঘণ্টা সময় লাগে। নন-এসি বাসের টিকেট ভাড়া ৫৫০ টাকা। এরপর সুনামগঞ্জ বাস-টার্মিনাল থেকে রিকশায় করে সাহেববাজার ঘাট পর্যন্ত যেতে হবে। বর্ষার সময় সাহেব বাড়ি ঘাট থেকে সরাসরি স্পীড বোটে ২ ঘণ্টায় টাঙ্গুয়া যাওয়া সম্ভব। স্পীড বোটে যেতে খরচ হয় ৭৫০০ – ৮০০০ টাকা। তবে ইঞ্জিন বোটে এরচেয়ে কম খরচে যাওয়া সম্ভব। সেক্ষেত্রে গন্তব্যে পৌঁছাতে সময় লাগবে প্রায় ৫ ঘণ্টা। সিলেট থেকেও সুনামগঞ্জ যেতে পারেন। সেক্ষেত্রে আপনার প্রথমেই যেতে হবে কুমারগাও বাসস্ট্যান্ড সেখান থেকে সুনামগঞ্জের বাসের টিকেট জনপ্রতি ১০০ টাকা। সুনামগঞ্জ শহরের কিছুটা আগে সুরমা সেতু থেকে আপনি যেতে পারবেন লেগুনা অথবা মোটরসাইকেলে করে একেবারে তাহিরপুর পর্যন্ত। এক্ষেত্রে বাইকে জনপ্রতি ভাড়া ২০০ টাকা এবং লেগুনাতে ৫০-৬০ টাকা।

কোথায় থাকবেন

টাঙ্গুয়ার হাওরে থাকার জন্য দুই ধরণের ব্যবস্থা আছে। আপনি যদি অ্যাডভেঞ্চার পছন্দ করেন তবে আপনার জন্য রয়েছে নৌকায় থাকার  ব্যবস্থা। অন্যদিকে পরিবার পরিজন নিয়ে গেলে আপনি থাকতে পারেন হাওর বিলাশ নামের কাঠের বাড়িতে যা কিনা হাওর সংলগ্ন টেকেরহাটে অবস্থিত।
এখানে আপনি স্বল্প ভাড়ায় পেয়ে যাবেন রুম। তবে টুরিস্ট সিজনে গেলে রুম পাওয়া কিছুটা দুরহ। এর বাইরে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় আর কোন থাকার ব্যবস্থা নেই এখানে। তবে সুনামগঞ্জে আপনি ৫০০ থেকে ২০০০ টাকার মধ্যে পেয়ে যাবেন একাধিক রেস্ট হাউজ।

নৌকায় থাকার বিস্তারিত

চারিদিকে থৈথৈ পানি, আর আকাশ ভরা তারা, কোথাও নেই কোন কোলাহল, যেন ভিন্ন এক দুনিয়াতে চলে এসেছেন আপনি। এরকম কিছু অভিজ্ঞতা দিতে আপনাকে কিছুটা সাহস করে নৌকা ভাড়া করে রাত যাপন করতে হবে। কেননা টাঙ্গুয়ার হাওরের রাতের সৌন্দর্য উপভোগ করতে চাইলে নৌকায় থাকার কোন বিকল্প নেই। নৌকা ভাড়া করতে চাইলে অবশ্যই কিছু জিনিস মাথায় রাখবেন যেমন নৌকায় সোলার প্যানেলের মাধ্যমে মোবাইল চার্জ দেয়ার ব্যবস্থা আছে কিনা, লাইট ফ্যানের সুব্যবস্থা আছে কিনা এবং সবচেয়ে গুরুত্তপুর্ন বাথরুম আছে কিনা। এসব সুবিধা যেসব নৌকায় আছে তারা সাধারণত একটু বেশি ভাড়া দাবী করে থাকে তবে দামাদামি করলে কিছুটা কমে রফা হয়।



আপনি যদি গোটা একটি দিনের জন্য ছোট একটি নৌকা ভাড়া করেন তবে ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকার মধ্যেই পেয়ে যাবেন। তবে সদস্য বেশি থাকলে মাঝারী বা বড় নৌকা ভাড়া করতে হবে যার ভাড়া আকার আকৃতি ও সুবিধার উপর ভিত্তি করে ২,৫০০ থেকে ৪,০০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। তবে এসব নৌকায় শুধু রাতে থাকার ক্ষেত্রে আপনাকে গুনতে হবে ৩,৫০০ থেকে ৫,০০০ টাকা এবং বড় ও বিলাসবহুল নৌকার ক্ষেত্রে ৭,০০০ থেকে ১০,০০০ টাকা।  নৌকায় কোন খাবার ব্যবস্থা থাকে না, তাই আপনি নিজেই রান্না করতে পারেন অথবা সাথে করে ভাড়ায় একজন বাবুর্চি নিয়ে যেতে পারেন। নৌকায় লাইফ জ্যাকেট না থাকলে আপনি নিকটস্থ তাহিরপুর বাজার থেকে ভাড়ায় লাইফ জ্যাকেট সাথে নিতে পারবেন।

টাঙ্গুয়ার হাওরের ভিডিও দেখুনঃ শীতের টাঙ্গুয়ার হাওর

খাবারের ব্যবস্থা

আপনি যদি লং ট্যুরে টাঙ্গুয়ার হাওরে ঘুরতে আসেন তবে একই সাথে পেয়ে যাবেন একটি পিকনিকের মজা। নৈসর্গিক সৌন্দর্যের মাঝে এখানে আপনি নিজেই রান্না করে খেয়ে নিতে পারেন ভিন্ন এক অভিজ্ঞতা। বাজারটাও করতে হবে নিজের হাতেই, তবে এতটা সতেজ খাবার সাথে বিলের তাজা মাছ আপনি আর কোথাও পাবেন না। এছাড়া বালিহাঁস বা পাতিহাঁসের বার্বিকিউও করতে পারবেন। নিকটস্থ তাহিরপুর বাজার থেকে পেয়ে যাবেন রান্নার সব উপকরণ। তবে এই ঝামেলায় যেতে না চাইলে টেকেরহাটে আপনি একাধিক হোটেল থেকে খেতে পারবেন সুস্বাদু খাবার। এছাড়া আপনি যদি একদিনের ট্যুরে যান তবে আপনি এখানকার স্থানীয় রেস্টুরেন্ট থেকে তিন বেলার খাবারই অনায়াসে পেয়ে যাবেন। খাবারের দামও তুলনামূলক কম।

ট্যুর প্ল্যান-১ (শুধু টাঙ্গুয়ার হাওর ভ্রমন)

মেম্বারঃ ৪-৫ জন

ব্যাপ্তিঃ ২ রাত ১ দিন (আসা-যাওয়া ২ রাত, ঘোরাঘুরি ১ দিন)

মোট খরচঃ ২,১৫০ টাকা (৫৫০*২=১১০০ টাকা বাস ভাড়া, ৩০০ টাকা বাইক ভাড়া, লাঞ্চ ও ডিনার ৩০০ টাকা, নৌকা খরচ ২৫০ টাকা, অন্যান্য ২০০ টাকা)

ধরুন ৫ জনের একটি গ্রুপ দুই রাত একদিনের জন্য টাঙ্গুয়ার হাওর ঘুরতে যাচ্ছেন। সেক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো হয় আপনারা রাতে ঢাকা সুনামগঞ্জের উদ্দেশ্যে রওনা দিলে। ঢাকার সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে একধিক বাস প্রতিদিন সুনামগঞ্জের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। যেহেতু যেতে সর্বমোট ৬ ঘণ্টার মত সময় লাগবে তাই রাত ১২ টার বাসে উঠলে সবচেয়ে ভালো হয়। ভোর ৬ টা নাগাদ পৌঁছে যাবেন সুনামগঞ্জ। বাস টার্মিনালের আশেপাশে যেকোনো হোটেল থেকে সকালের নাস্তা করে নিবেন। এরপর নিকটস্থ নতুন ব্রিজ এলাকা থেকে আপনি তাহেরপুর বাজারের উদ্দেশ্যে বাইক ভাড়া করবেন। ২ ঘন্টার মত লাগবে যেতে এবং এই যাওয়ার পথেই আপনি উপভোগ করতে পারবেন মেঘালয়ের পাহাড়পুঞ্জের নিদারুণ দৃশ্য। আপনার কষ্টটা যে নিরর্থক না ঠিক তখনই অনুভব করবেন। বাইক এগিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে চারদিকের মনোরম পরিবেশ আরো দৃষ্টিনন্দন হতে থাকবে।



সকাল ৮ টা নাগাদ পৌঁছে যাবেন তাহেরপুর বাজারে। এখান থেকে একটি মাঝারি আকৃতির নৌকা ভাড়া করে চলে যাবেন টাঙ্গুয়ার হাওরের ওয়াচটাওয়ারে। সেখানে চারপাশটা উপভোগ করে সকাল ১০ টার মধ্যে আরেকটি নৌকা ভাড়া করবেন কমপক্ষে ৩ ঘন্টার জন্য। মন ভরে ঘুরে নিবেন পুরো হাওর। এরপর ২ তার মাঝে ওয়াচটাওয়ারে ফিরে হাওর বিলাসে সেরে নিবেন দুপুরের খাবার। ভালো হয় যদি আগেই অর্ডার করে যান খাবারের, কেননা টুরিস্ট সিজনে অনেক সময় খাবারের ঘাটতি দেখা যায়। খাওয়া শেষ করে চারপাশটা আরেকটু দেখে তাহেরপুর বাজারের উদ্দেশ্যে রওনা দিন। পৌছাতে বিকাল ৪ টা বেজে যাবে। সেখান থেকে পুনরায় বাইক ভাড়া করে চলে আসবেন সুনামগঞ্জ বাস টার্মিনালে। চাইলে তখনই রওনা দিতে পারেন ঢাকার উদ্দেশ্যে অথবা রাতের টিকেট কেটে ঘুরে আসতে পারেন সুনামগঞ্জে অবস্থিত হাসান রাজার বাড়ি থেকে।

যদি আপনার হাতে সময় থাকে আরেকটা দিন থেকে যাওয়ার তাহলে আপনারা থেকে যেতে পারেন তাহেরপুর বাজারের কোন রেস্ট হাউজে। যার পুরষ্কার হিসেবে পাবেন মেঘালয়ের অপার সৌন্দর্যমণ্ডিত পাহাড়ের হাতছানিতে সাড়া দেয়ার সুযোগ।

প্ল্যান ২ এ রয়েছে এর বিস্তারিত।

ট্যুর প্ল্যান-২ (টাঙ্গুয়ার হাওর নাইট স্টে ও আশেপাশের স্পট ভ্রমন)

মেম্বারঃ ৪-৫ জন

ব্যাপ্তিঃ ৩ রাত ২ দিন

মোট খরচঃ ৩,১৫০ টাকা(হোটেল), ৩,৬৫০ টাকা (নৌকা) (প্ল্যান-১ এর ২০০০ টাকা প্লাস হোটেল/নৌকা ভাড়া ৫০০/১০০০, রাত+সকাল খাবার ৩০০, বাইক খরচ-২০০, লাঞ্চ-১৫০)

যেমনটা আগে বলেছিলাম, থাকার ব্যবস্থা আছে ২ ধরনের। তাহেরপুরে থেকে যেতে পারেন বিভিন্ন রেস্ট হাউজে যেখানে আপনি রুম পাবেন একদমই ন্যায্য ভাড়ায়। অথবা আপনি যদি সূর্যদয় উপভোগ করতে চান থাকতে পারেন নৌকায়। সেক্ষেত্রে ঘাট থেকে ভাড়া করতে পারেন মাঝারী আকৃতির নৌকা। ভাড়ার ক্ষেত্রে দামাদামি করতে ভুলবেন না। মাঝি কে বলে রাতের খাবারের প্রয়োজনীয় আয়োজন করে নিন। আশেপাশের এলাকা ঘুরে সন্ধ্যার পর পর চলে আসবেন নৌকায়। মাঝি নৌকা বেয়ে নিয়ে যাবে মাঝ-হাওরে। মনের সুখে দেখতে পারবেন হাওরের রাতের সৌন্দর্য।


রাতের খাবার শেষে ভারত বাংলাদেশের সীমান্ত বর্ডার লাইট দেখে নিতে পারবেন। এরপর অবশ্যই ভালো মত একটা ঘুম দিন যাতে পরের দিন জার্নি করার যথেষ্ট এনার্জী পান। ভোর ৫ টায় ঘুম থেকে উঠে দেখতে পারবেন সূর্যদয়। এ দৃশ্য ভোলার নয়। প্রকৃতি তার প্রতিটা ক্ষুদ্র অংশ দিয়ে যেনো স্বাগত জানায় নতুন সূর্যকে আর আপনি যেনো সেই ঘটনার সাক্ষী। একটু বেলা হলে সকালের নাস্তা করে নিবেন। এরপর চলে আসবেন তাহেরপুর বাজারে যেখান থেকে আপনি বাইকে করে বাদাঘাটে চলে আসবেন। এখানে কিছুক্ষণ ঘুরে চলে যাবেন বড়ছড়া তে যেখানে প্রকৃতি আপনার জন্য তার অপার সৌন্দর্য দিয়ে স্বাগত জানাবে। এখানে ঘুরেফিরে আপনি আবার চলে আসবেন বাদাঘাটে এবং সেখানে লাঞ্চ সেরে রওনা দিবেন সুনামগঞ্জের উদ্দেশ্যে। ৫ টার মাঝে পৌঁছে যাবেন বাসস্ট্যান্ডে এবং সেখান থেকে প্ল্যান ১ ফলো করবেন।

ভ্রমণের সময় যা যা সাথে রাখা উচিত

  • খাবার পানি
  • পাওয়ার ব্যাংক
  • টর্চ লাইট
  • ছাতা/ রেইনকোট
  • সাধারণ রোগের ঔষধ
  • মগ
  • চাদর
  • এক সেট ড্রেস
  • সানগ্লাস
  • ব্লুটুথ স্পিকার
  • চামড়ার স্যান্ডেল এবং
  • ব্যাগ ঢাকা যায় এরকম আকারের একটি পলিথিন ব্যাগ

টাঙ্গুয়ার হাওরে ভ্রমণের কিছু সতর্কতা

  • আপনার সাতার জানা না থাকলে অবশ্যই লাইফ জ্যাকেট সবসময় সাথে রাখুন
  • কোন কিছু কেনার আগে বা ভাড়া করার আগে অবশ্যই ভালোমত দরদাম করে নিন
  • কোন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় সহায়তা পেতে তাহিরপুর থানায় জিডি করে নিতে পারেন
  • আপনি যদি গ্রুপে যান তবে আপনার খরচ তুলনামূলক অনেক কম হবে
  • এমন কোন কাজ করবেন না যাতে হাওরের ইকোসিস্টেম ক্ষতিগ্রস্থ হয়
  • রাতের বেলা আপনি যদি নৌকায় অবস্থান করেন তবে উচ্চ আলো সৃষ্টি করা থেকে বিরত থাকুন
  • যেকোনো রকম প্রাকৃতিক দুর্যোগে ভ্রমণ স্থগিত করে নিরাপদ স্থানে অবস্থান করুন

ছবিটি তুলেছেনঃ  Monzur Khan


শেয়ার করুন সবার সাথে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!